পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়


সিনিয়র শিক্ষক, প্রগতি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নন্দীপাড়া, ঢাকা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্ন : আমরা এখন কীভাবে আমাদের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করি? উত্তর : ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। আমরা এখন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করি। * আমরা দিবসটিকে বাংলাদেশের অন্যতম জাতীয় দিবস হিসাবে পালন করি। * এদিন প্রথম সূর্যোদয়ের পর থেকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এ দেশের সর্বস্তরের জনগণ। * বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ও গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলো জাতীয় পতাকা দিয়ে সাজানো হয় ও আলোকসজ্জা করা হয়। * বিভিন্ন স্থানে মেলার আয়োজন করা হয়। * বিভিন্ন দেশীয় খেলার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। * বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে তাদের আবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়। * মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। * সমাজে নানা গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার দেশি-বিদেশি নানা গুণীজনকে পদক প্রদান করেন। * বিভিন্ন বাহিনী ও শিশু-কিশোরদের কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয় এ দিন। * বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ দিনটি বর্ণাঢ্যভাবে পালন করে। সুতরাং, দেশের সর্বস্তরের জনগণ সরকারের সঙ্গে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বাধীনতা দিবসকে পালন করে গর্বের সঙ্গে। প্রশ্ন : মুজিবনগর সরকার কখন ও কোথায় গঠিত হয়েছিল? এ সরকারে কারা ছিলেন? উত্তর : মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধের কিছু দিনের মধ্যেই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে প্রথম যে অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়েছিল তা-ই মুজিবনগর সরকার। এ সরকার ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠিত হয়। কিন্তু শপথ নেয় ১৭ এপ্রিল। মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা (বর্তমান উপজেলা মুজিবনগর) গ্রামের আমবাগানে এ সরকার শপথগ্রহণ করে। যারা ছিলেন রাষ্ট্রপতি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ সরকারের রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। কিন্তু তিনি তখন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি। তার অনুপস্থিতিতে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী : তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা এবং দেশে ও বিদেশে এ যুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন করা ও সমর্থন আদায় করার ক্ষেত্রে এ সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ সরকার গঠনের পর থেকে অগণিত মানুষ দেশকে মুক্ত করার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রশ্ন : আমাদের মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের গুরুত্ব বর্ণনা কর। উত্তর : মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধ শুরুর কিছু দিনের মধ্যেই বাংলাদেশে প্রথম যে অস্থায়ী সরকার গঠিত হয় তা-ই মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত। গুরুত্ব : ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকে শুরু করে দীর্ঘ ২৩ বছর পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে শাসন ও শোষণ করে। এ শাসন ও শোষণের হাত থেকে চূড়ান্ত মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শুরু হয় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। এ যুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তির নেশায় পাগল অথচ দিশাহারা এ জাতিকে দিকনির্দেশনার জন্য ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা (বর্তমান উপজেলা মুজিবনগর) গ্রামের আমবাগানে এ সরকার শপথগ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ সরকারের রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। তার অবর্তমানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হন উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রী হন তাজউদ্দীন আহমদ। * এ সরকার মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার কাজ দক্ষ হস্তে পরিচালনা করে। * দেশ ও বিদেশে এ যুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তোলে। * দেশ-বিদেশের সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। * এ সরকার গঠন দিশাহারা জনগোষ্ঠীর মনোবল বহুগুণ বৃদ্ধি করে। ফলে এ সরকার গঠনের পর থেকে অগণিত মানুষ দেশকে মুক্ত করার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে।