খুলনা জেলা যুবদলের সা. সম্পাদককে তুলে নেওয়ার অভিযোগ


খুলনা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইবাদুল হক রুবায়েদকে রাজধানী ঢাকার শ্যামলীর নিজ বাসার সামনে থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার রাতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী আরও বলেন, সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা পুলিশ রুবায়েদকে তুলে নিয়ে যায়। তুলে নিয়ে যাওয়ার পরেও এখন পর্যন্ত স্বীকার করছে না। স্বামীর সন্ধানে রুবায়েদের স্ত্রী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ের সামনে আহাজারি করছেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে আমরা জানতে পেরেছি রুবায়েদ মহানগর গোয়েন্দা দপ্তরেই রয়েছে। কিন্তু এখনো রুবায়েদের বিষয়টি স্বীকার না করায় তার পরিবারের মধ্যে শঙ্কা ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনায় নিন্দা, প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, অবৈধ আওয়ামী সরকারের জনভিত্তি নেই বলেই গুম—খুনের মতো মনুষ্যত্বহীন কর্মসূচি বেছে নিয়েছে। সারা বিশ্ব থেকে গুমের বিষয়ে তীব্র নিন্দার ঝড় বইলেও শেখ হাসিনা সরকারের টিকে থাকার জীবনীশক্তি হচ্ছে গুম, ক্রসফায়ার, গায়েবি মামলা ও বেআইনি গ্রেফতার। চরম মানবতাবিরোধী কর্মসূচিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিএনপিসহ বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ওপর। জনগণের প্রবল শক্তির ঢেউ তাদের দিকে যাতে ধেয়ে যেতে না পারে সেজন্য বেছে বেছে বিএনপিসহ বিরোধী দলের তরুণ নেতাদের টার্গেট করছে স্বদেশের সীমানা থেকে নিরুদ্দেশ করার। এ উদ্দেশ্য চলমান রাখতেই খুলনা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ইবাদুল হক রুবায়েদকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে এখনো স্বীকার করছে না। অবিলম্বে তাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা। রিজভী বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অবৈধ আওয়ামী সরকার আগের মতোই শুরু করেছে সর্বনাশা কর্মকাণ্ড। দেশজুড়ে পরিকল্পিত ছকের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এদের আমলে চলে আসা গুম, ক্রসফায়ার ও অপহরণ এখন জোরেসোরে শুরু হয়েছে। গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের শুধু গ্রেফতারই করা হচ্ছে না, বর্তমান সরকারের দায়েরকৃত ৯/১০ বছর পূর্বের মিথ্যা মামলায় তড়িঘড়ি করে সাজা দেওয়ার ধুম শুরু হয়েছে। আইন, প্রশাসন, বিচারসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয়। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা বাস্তবায়নে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগ এখন সদা তৎপর। ফ্যাসিস্ট শাসনকে সুনিশ্চিত ভঙ্গিতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন শেখ হাসিনা। নির্বাচনি ময়দান ফাঁকা করে নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করেছেন তিনি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, মামলা, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এবং ওয়ারেন্ট ছাড়াই গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের যেকোনো স্থান ও দিনে—রাতের যেকোনো সময় তুলে নিয়ে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।