বিদ্যালয়ে চুরির অভিযোগে ৭ শিক্ষার্থীকে জরিমানা


বিদ্যালয়ে চুরির অভিযোগে ৭ শিক্ষার্থীকে জরিমানা
নাটোরের গুরুদাসপুরে এক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত বেঞ্চের লোহার কাঠামো চুরির অভিযোগ এনে ৭ শিক্ষার্থীকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ফলে জরিমানার টাকা দিতে না পারায় অভিভাবকদের চাপ দিচ্ছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। তাঁদের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। ভয়ে অনেকে গ্রামে থাকতে পারছেন না।শুক্রবার(৭ এপ্রিল) গুরুদাসপুর প্রেস ক্লাবের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার।সংবাদ সম্মেলনে পরিবার দাবি, গত ৪ এপ্রিল উপজেলার সাহাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত বেঞ্চের লোহার কাঠামো খোয়া যায়। পরে ৭ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এসব চুরির অভিযোগ তোলা হয়। তাদের মধ্যে ৫জন ওই বিদ্যালয়ের এবং দু’জন পার্শ্ববর্তী আরেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। এদিন সাহাপুর বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ফরিদ শাহ ও প্রধান শিক্ষক সালমা খাতুন সালিশে বসেন। সেখানে তাঁরা এবং ৭শিশুর অভিভাবকরা ছিলেন। অভিভাবকদের থানা পুলিশের ভয় দেখিয়ে শিশুদের দিয়ে চুরির মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করেন।অভিভাবকদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে মোট ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে সাদা কাগজে সই নেন ফরিদ শাহ ও সালমা খাতুন। তিন অভিভাবক ৩০ হাজার টাকা দিয়েছেন। বাকী টাকা না দিলে তাঁরা গ্রামে থাকতে পারবেন না বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। টাকা পরিশোধে ব্যর্থ শিশুদের অভিভাবকরা ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন।তৃতীয় শ্রেণিপড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, টাকার চাপে তিনি গহনা বন্ধক রেখে ফরিদ শাহকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। আরেক অভিভাবক ধার করে ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন এবং ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন আরেকজন। তাঁরা অপবাদ থেকে মুক্তি, জরিমানার টাকা ফেরত ও দোষীদের বিচার দাবি করেন।৭ শিশুকে জরিমানার কথা স্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক সালমা বেগম। তবে জিনিস হারানো বা চুরির ঘটনায় থানায় জিডি বা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করেননি বলে জানান তিনি।সভাপতি ফরিদ শাহ বলেন, প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে চুরির ঘটনায় ওই শিশুরা দায়ী। প্রত্যেককে এক লাখ করে টাকা জরিমানা করা উচিত ছিল। আদায় করা ৩০ হাজার টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হয়নি।উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খ ম জাহাঙ্গীর জানান, চুরি ও বিচারের বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁকে লিখিত বা মৌখিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। ভুক্তভোগী অভিভাবকরা অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে এ কর্মকর্তা জানান।