গাজীপুরে যারা ডাবল রোল প্লে করেছে, তাদের তালিকা তৈরি হচ্ছে : মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী


মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, কারা কারা গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ডাবল রোল প্লে করেছে, তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। আমাদের দুইভাবে বিচার করতে হবে। যারা দায়িত্বে অবহেলা করেছে, আর যারা বলেছে একটা, করেছে অন্যটা। আমরা যেহেতু দল করি, তাই দলের একটা বিধিবিধান আছে, গঠন তন্ত্র আছে। সেই গঠনতান্ত্রিক ভাবেই আমরা আলোচনা করে দায়িত্বে যারা ছিলো তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা অপরাধ করেছে এবং আর যারা বেইমানি করেছে দুইটা একই অপরাধ না। তাই অপরাধের মাত্রা অনুসারে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুক্রবার বিকালে গাজীপুর মহানগরের নগরপাড়া এলাকায় সাগর সৈকত কনভেনশন সেন্টারে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নির্বাচন পরিবর্তী মূল্যায়ন সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় প্রধান অতিথির বক্তেব্যে এসব কথা বলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। নির্বাচন পরবর্তী মূল্যায়ন সভায় বাসন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল বারির সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নির্বাচনের পরাজিত আ.লীগের দলীয় প্রার্থী আজমত উল্লা খান, আফজাল হোসেন সরকার রিপন, গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল, মোকছেদ আলম প্রমুখ। এছাড়া সভায় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়েও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য করেছেন। মন্ত্রী বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ৩৫ লাখ লোক বসবাস করে। আমাদের পর পর তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল। প্রথম নির্বাচন সেটা একটা দেশব্যাপী বিরাট ইস্যু হয়েছিল। আমাদের তখন প্রতিকুল অবস্থা ছিল। ২০১৩ সালে আমরা জিততে পারি নাই। যারা দায়িত্ব পেয়েছে তারা জনগেনের কাজ করতে পারেনি। ব্যর্থতা আর অভিযোগে, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে এই সমস্ত অভিযোগে অভিভাবকহীন ছিলো গাজীপুর সিটি করপোরেশন। পরে যাকে আমরা নির্বাচিত করলাম দলের মনোনিত প্রার্থী ছিলেন তিনি এমন কিছু কাজ করলেন দল তাকে অব্যাহতি দিয়ে দিলো এবং তাকে বরখাস্ত করা হলো। সরকারি অর্থ তার বিরুদ্ধে আত্নসাতের অভিযোগ রয়েছে। তিনি নিজেই বলেছিলেন প্রধান মন্ত্রী গাজীপুরে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছিলেন। সেই টাকার উন্নয়নের সুফল গাজীপুরবাসী পায়নি। তিনি বলেন, গত ১০ বছর যাবত যে উন্নয়ন গাজীপুরবাসী পেত তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সরকারের একটা বিধান আছে সব সিটি করপোরেশনে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থাকে। সেই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কোথাও জনপ্রতিনিধি আছে, কোথাও সরকারি কর্মচারী আছে। আজমত উল্লা খানের স্থানীয় সরকার পরিচালনায় ব্যাপক অভিজ্ঞতা আছে। যার এতো দক্ষতা, যার এতো সততা আছে, তাকে যদি গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয় তবে নগরীর বঞ্চিত ৩৫ লাখ লোকের উন্নয়ন করতে পারবেন। এবার যিনি মেয়র হয়েছেন তিনি কেমন করবেন জানি না। মানুষের ধারনা তার যে যোগ্যতা, তার যে অভিজ্ঞতা তাতে মানুষের যে প্রত্যাশা তা পূরণ নাও হতে পারে। দলের মূল্যায়ন সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন আজমত উল্লা খান। তিনি বলেন, আমাদের এখন থেকেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। আমরা কে কি করলাম সেটি বড় কথা নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন। আমরা অনেক কিছু হয়েও লাভ কি হবে? ষড়যন্ত্র চলছে। ৭৫ এর আগে যেমন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছিল। এবারও আপনারা লক্ষ্য করতে পারছেন দেশে এবং বিদেশে সেই চক্র কাজ করছে। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আমি আবারও বলি আমাকে আপনারা আরো দুঃখ দেন। আমার কোনো আপত্তি নেই। কষ্ট দেন আপত্তি নাই। বুক চাপা কান্না করান আপত্তি নাই। পায়ে হাত দিয়ে বলি দয়া করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলে নেত্রীকে কোনো দুঃখ দিবেন না। নেত্রীকে যদি কষ্ট দেন আল্লাহ একজন আছেন, তিনি অবশ্যই আপনাদের উপরে গজব নাজিল করবেন। তাই শেখ হাসিনাকে কোনো কষ্ট বা দুঃখ দিবেন না।