ছেলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন কম্বোডিয়ার বিতর্কিত প্রধানমন্ত্রী


পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। বুধবার দেওয়া এক বক্তৃতায় এই ঘোষণা দেন তিনি। আর এর মাধ্যমে তার ছেলে হুন মানেতের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ প্রশস্ত হলো। রয়টার্স জানিয়েছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নতুন সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন মানেত। ৭০ বছর বয়সি হুন সেন ১৯৮৫ সাল থেকে কম্বোডিয়া শাসন করছেন। এই দীর্ঘ সময়ে ক্ষমতায় থাকার জন্য তিনি কর্তৃত্ববাদী শাসন চালান। এর জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে বিতর্কিত ও সমালোচিত হয়েছেন। তিনি ২০২০ সালে প্রথম তার বড় ছেলে হুন মানেটের কাছে ক্ষমতা পরিবর্তনের পতাকা তুলেছিলেন। তবে বুধবার পর্যন্ত, পর্যবেক্ষকরা নিশ্চিত ছিলেন না যে ঠিক কখন এই ক্ষমতা হস্তান্তর হবে। হুন সেনের ছেলে হুন ম্যানেট কম্বোডিয়ান সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দেশটির ক্ষমতা নেওয়ার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন। বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, হুন সেনের ছেলে হান ম্যানেট (পড়ালেখা করেছেন পশ্চিমা দেশে) ক্ষমতা নিলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। হান ম্যানলেট হুন সেনের তিন ছেলের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তিনি কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর প্রধান। হুন সেনের অন্য দুই ছেলেও পার্টি ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তবে হুন সেনের ছেলে ক্ষমতায় এলে যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে, তা মনে করেন না অনেক বিশেষজ্ঞ। গত রোববার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শক্তিশালী প্রতিপক্ষহীন একতরফা ওই নির্বাচনে ভূমিধস জয়ের দাবি করে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের রাজনৈতিক দল কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি)। সমালোচকরা দেশটির এবারের সাধারণ নির্বাচনকে ‘ব্যাপক প্রতারণা’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এমনকি দেশটির শক্তিশালী কোনও বিরোধী দল এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। আর যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তাদের হুন সেনের সিপিপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সক্ষমতাও নেই। আর এরপরই কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে দেশটিতে কিছু বিদেশি সহায়তা কর্মসূচিও স্থগিত করার ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন। মূলত গণতন্ত্রকে অবমূল্যায়ন ও ধ্বংসসাধনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।