পুতিন-পেজেশকিয়ান বৈঠক, বিশ্বকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা


রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের বৈঠক হয়েছে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) তুর্কমেনিস্তানের আশগাবাতে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সাইডলাইনে এ বৈঠক হয়। বৈঠকে ইরান ইস্যুতে পুতিন গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনায় ওই মন্তব্য বিশ্বকে একটি বার্তা দিলো। আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পেজেশকিয়ান প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর পুতিনের সঙ্গে এটিই তার প্রথম বৈঠক। এতে পুতিন বলেছেন, ইরানের সাথে সম্পর্ক মস্কোর কাছে অগ্রাধিকার বিষয়। এ সম্পর্ক ভালোভাবে এগোচ্ছে। বিশ্বের ঘটনাবলি নিয়ে দুই দেশের দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। পুতিন বলেন, আমরা সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একসাথে কাজ করছি এবং বিশ্বের ঘটনা সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রায়শই খুব কাছাকাছি। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য গত বছর হ্রাস পেলেও এই বছর বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ইতিবাচক সামগ্রিক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন পুতিন। তিনি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ও ব্রিকস-এর পূর্ণ সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাওয়ায় ইরানকে অভিনন্দন জানান। এ সময় ২৩-২৪ অক্টোবর কাজানে আসন্ন ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে পেজেশকিয়ানকে আমন্ত্রণ জানান। সেখানে আরেকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরিকল্পনা করেছে দুই দেশ। পেজেশকিয়ান পুতিনের সঙ্গে সম্মতি জ্ঞাপন করে বলেন, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত হচ্ছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এই সম্পর্ক জোরদার করতে সব সময় উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, আমাদের নীতি এবং আন্তর্জাতিক অবস্থান আপনার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমি আশাবাদী আমাদের দেশও শিগগির ব্রিকসের পূর্ণ সদস্য হবে। হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় তার পূর্বসূরি ইব্রাহিম রাইসি মারা যাওয়ার পর পেজেশকিয়ান জুলাই মাসে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এরই মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক দ্রুত অবনতি ঘটে। সম্প্রতি ইসরায়েল লেবাননে হামলা শুরু করে। বিমান হামলায় নিহত হন ইরানের ঘনিষ্ঠ সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ। এতে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কার মধ্যে ইসরায়েলে ১৮০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে তেহরান। এরপর সমীকরণ এক প্রকার ঝুলে আছে। ইরান বলছে, তারা আর হামলা করতে চায় না। কিন্তু তেলআবিব জবাব দিলে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত রয়েছে। সে সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা করছেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। অপরদিকে সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়াতে পশ্চিমা মিত্রদের থেকে চাপ বাড়ছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর। এমন সময় ইরানের প্রতি পুতিন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করলেন। তার মন্তব্য এ অঞ্চলে যুদ্ধরত গোষ্ঠীগুলোর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।