বাঙলা কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই মামলা কবরে থেকেও আসামি শ্রমিক দল নেতা
অনলাইন নিউজ ডেক্স
বিএনপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় হওয়া মামলায় দুই বছর আগে মারা যাওয়া শ্রমিক দল নেতাকে আসামি করা হয়েছে। তার নাম মো. আ. জব্বার হাওলাদার। তিনি দারুসসালাম থানা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুর কারণ বিষয়ক চিকিৎসা সনদের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর তার মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন।
১৮ জুলাই মঙ্গলবার বিএনপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধাওয়া-পালটাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় বুধবার রাজধানীর দারুসসালাম থানায় দুটি মামলা হয়। এতে বিএনপির ২২৯ জন নেতাকর্মীর নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮০০ থেকে ১০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। একটি মামলায় আ. জব্বারকে ২নং আসামি করা হয়েছে। এ মামলার বাদী মো. মহিদুর রহমান। অন্যটির বাদী রুবেল হোসেন।
জব্বার হাওলাদারকে যে মামলার আসামি করা হয়েছে সেটিতে বিএনপির ১০৯ নেতাকর্মীর নামোল্লেখ রয়েছে। আর অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে। মামলায় তার পরিচয় লেখা হয়েছে দারুসসালাম থানা শ্রমিক দলের সাবেক সেক্রেটারি। বাবার নাম লেখা হয়েছে আসমত আলী হাওলাদার। জব্বার হাওলাদারের জাতীয় পরিচয়পত্রে দেখা যায়, সেখানে তার বাবার নাম ও মামলায় উল্লিখিত নাম একই রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দারুসসালাম থানার এসআই আসাফুদৌল্লাহ সরদার বলেন, ‘আপনি কি নিশ্চিত মামলার আসামি জব্বার মারা গেছেন?’ তখন মৃত্যুর কারণ বিষয়ক চিকিৎসা সনদের কথা উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘বাদী কীভাবে যে কি করল বুঝতে পারছি না। আমি আপনার সঙ্গে পরে যোগাযোগ করব।’
দারুসসালামের স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই থানার বাগবাড়ি, খালেক সিটি এলাকায় থাকতেন আ. জব্বার। ২০২১ সালে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার আগে দীর্ঘদিন দারুসসালাম থানা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এক সময় বৃহত্তর মিরপুরের সাবেক সংসদ-সদস্য এসএ খালেকের ঘনিষ্ঠ লোক হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। জীবিত অবস্থায় জব্বারের বিরুদ্ধে ২০-২৫টি মামলা হয়। ক্যানসারের চিকিৎসা ও মামলার খরচ জোগাতে এক সময় গাবতলীর বাগবাড়ি এলাকার ৪তলা বাড়ি বিক্রি করে দেন তিনি।
দারুসসালাম থানা বিএনপির আহ্বায়ক ও গত নির্বাচনে ঢাকা ১৪ আসনের বিএনপির সংসদ-সদস্য পদপ্রার্থী এসএ সিদ্দিক সাজু বলেন, জব্বার শ্রমিক দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতা ছিলেন। জীবিত অবস্থায় তার বিরুদ্ধে অসংখ্য রাজনৈতিক মামলা হয়। মৃত্যুর পরও মামলা তার পিছু ছাড়েনি। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা এসএ খালেকসহ অনেকেই তার পরিবারের সহায়তায় এগিয়ে যান। তার বড় মেয়ের জামাইকে আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এতে আ. জব্বারের পরিবারটি খেয়েপরে বেঁচে আছে। সরকার মৃত্যুর পরও তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদের ফ্যাসিস্ট চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।’ দারুসসালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আমিনুল বাশার বলেন, ‘মামলার বাদী বাঙলা কলেজের স্টাফ। তিনি হয়তো ভুলে মৃত ব্যক্তিকে আসামি করছেন। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।