চমেক কর্মচারীদের কাণ্ড দায়িত্বে ফাঁকি দিয়ে শুভেচ্ছা বিভাগীয় কমিশনারকে
অনলাইন নিউজ ডেক্স
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের দায়িত্ব ফাঁকি দিয়ে সদ্য যোগ দেওয়া বিভাগীয় কমিশনারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের নেতারা। বৃহস্পতিবার সকালে সংগঠনটির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এ সময় চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের ছবি ফেসবুকেও প্রচার করা হয়েছে। তবে তাদের এই কাণ্ডে দিনব্যাপী হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়ে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি আবদুল মতিন মানিক। তিনি চমেক হাসপাতালের এনসিলারি ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। মানিকসহ হাসপাতালের ১২ জন কর্মচারীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। যার মধ্যে রয়েছেন-হাসপাতালের খাদ্য বিভাগের অফিস সহায়ক মো. ইসহাক, চমেক অধ্যক্ষ ও গাইনি বিভাগের প্রধান সাহেনা আক্তারের অফিস পিয়ন নুরুল আনোয়ার, মানসিক বিভাগের অফিস সহায়ক মো. বেলাল হোসেন, অপারেশন থিয়েটারের ওয়ার্ডবয় শামীমুর রহমান, হাসপাতালের হিসাব শাখার অফিস সহায়ক মামুনুল কবির, ২৬ নম্বর অর্থোপেডিক্স সার্জারি ওয়ার্ডের সর্দার শেখ আহাম্মদ, জরুরি বিভাগের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন জনি, প্রশাসনিক ভবনের শাহাবুদ্দিন, ৮ নম্বর শিশু ওয়ার্ডের ওয়ার্ডবয় পলাশ বড়ুয়া, ফিজিক্যাল মেডিসিন ওয়ার্ডের ক্লিনার মো. সোলায়মান ও মেডিসিন আউটডোরের অফিস সহায়ক কুতুব উদ্দিন।
এদিন হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। সবচেয়ে বেশি ছিল মেডিসিন ওয়ার্ডে। রোকেয়া বেগম নামের এক রোগী সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষায় থেকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে যান। তিনি বলেন, ‘৩ দিন ধরে জ্বর-মাথাব্যথা। তাই হাসপাতালে এসেছিলাম। কিন্তু রোগীর এত ভিড় যে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হচ্ছে না।’ এ সময় মেডিসিন আউটডোরের অফিস সহায়ক ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে। এ কারণে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগীদের।
জানা যায়, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের দায়িত্ব পালন করে আসা আমিনুর রহমানকে সম্প্রতি বদলি করা হয় স্থানীয় সরকার বিভাগে। তার স্থলাভিষিক্ত হন কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক তোফায়েল ইসলাম। ১৮ জুলাই তিনি নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দুদিন না যেতেই নতুন বিভাগীয় কমিশনারকে ফুল দিতে যায় সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ। এজন্য সকাল থেকেই বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে হাজির হন সংগঠনের নেতারা। সকাল সাড়ে ১০টায় বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তাদের। পরে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং ফটোসেশনের ছবি ফেসবুকে আপলোড করেন তারা। বিভাগীয় কমিশনারকে ফুল দেওয়া নিয়ে সারা দিনই ব্যস্ত সময় কাটান কর্মচারী পরিষদের নেতারা। এতে নেতৃত্ব দেন আবদুল মতিন মানিক। তিনি চতুর্থ শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতির বিভাগীয় জেলা শাখা ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আঞ্চলিক শাখার সভাপতি হিসাবে রয়েছেন।
চমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর অফিস সহায়ক (চতুর্থ শ্রেণি) পদ থেকে তৃতীয় শ্রেণির পদে পদোন্নতি পান আবদুল মতিন মানিক। এর কিছুদিন পর কর্তৃপক্ষ ওয়ার্ড মাস্টার হিসাবে দায়িত্ব দেয়। বর্তমানে কাজও করছেন হাসপাতালের এনসিলারি ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার হিসাবে। চতুর্থ শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার পরও রহস্যজনক কারণে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির পদ ছাড়ছেন না তিনি। নিয়ম অনুযায়ী পদোন্নতি পাওয়ার পর ছাড়তে হবে সাংগঠনিক পদ। গত বছরের ডিসেম্বরে সেই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। এরপর কেন্দ্র থেকে সেই কমিটির মেয়াদ আরও ৬ মাস বর্ধিত করা হয়। সেই সময়ও জুনে শেষ হয়েছে।
জানতে চাইলে আবদুল মতিন মানিক বলেন, ‘চট্টগ্রামে নতুন যোগ দেওয়া বিভাগীয় কমিশনারকে সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে হাসপাতাল পরিচালকের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।