মিয়ানমারে ৪০ শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা


মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে গেল তিনদিনে আরও তিনটি ঘাঁটি এবং ২০ জন সেনা হারিয়েছে ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। এ নিয়ে চার মাসে বিদ্রোহীদের কাছে ৪০টিরও বেশি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা সরকার। মিয়ানমারের বিদ্রোহী জোটে রয়েছে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) এবং এথনিক আর্মড অরগানাইজেশন্সের (ইআও)। পিডিএফ ও ইআওর মুখপাত্রদের বরাত দিয়ে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী জানিয়েছে, তিনদিনে কাচিন ও রাখাইন প্রদেশ এবং মান্দালয়, সাগাইং, মেগওয়ে ও তানিনথারি জেলায় জান্তা বাহিনীর ২০ সেনা মারা গেছে। ৩টি ঘাঁটিও তাদের হাতছাড়া হয়েছে। জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠীর তীব্র লড়াই চলছে ওই দুই প্রদেশ ও জেলাগুলোয়। যে তিনটি সামরিক ঘাঁটির দখল হারিয়েছে জান্তা, সেগুলোর সবই মিয়ানমারের সর্ব-উত্তরের প্রদেশ কাচিনে। প্রদেশটির মানসি শহরে তিনদিন ধরে ব্যাপক সংঘাতের পর নিকটবর্তী মাজি গাং এলাকার এ ঘাঁটিগুলোর দখল নিয়েছে পিডিএফের কাচিন প্রাদেশিক শাখার যোদ্ধারা। পিডিএফের পক্ষে এই সংঘাতে নেতৃত্ব দিয়েছে কাচিনভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী কাচিন ইনডিপেনডেন্টন্স আর্মি (কিয়া)। ইরাবতীর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তিন ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ছিল মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের হাতে। সংঘাতে জান্তা বাহিনীর গুলিতে কিয়ার এক কর্মকর্তা নিহত এবং পিডিএফ-এর পাঁচ যোদ্ধা আহত হয়েছেন। এর আগে জানুয়ারিতে কাচিনে একটি পুলিশ স্টেশনসহ ছয়টি ঘাঁটি-সামরিক স্থাপনার দখল নিয়েছে কিয়া। ২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে পরের বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার ও বন্দি করা হয়। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। গেল অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর। এদিকে দুইদিন আগে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় এবং রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ের পোন্নাগিউন শহরে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক যুদ্ধ শুরু হয়েছে রাখাইনভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ)। এই শহরে সামরিক বাহিনীর যে ঘাঁটিটি রয়েছে, সেটি মিয়ানমারে জান্তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটিগুলোর মধ্যে একটি। এই ঘাঁটিটির নিয়ন্ত্রণও ছিল লাইট ইনফ্যান্ট্রি বিভাগের হাতে।