পবিত্র ধর্মস্থানও এখন নারীদের জন্য নিরাপদ নয়—এমনই এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন মালয়েশিয়ার জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী লিশালিনি কারানান। কুয়ালালামপুরের একটি মন্দিরে পূজা দিতে গিয়ে পুরোহিতের হাতে যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তিনি। সুন্দরী প্রতিযোগিতায় মুকুটজয়ী এই অভিনেত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে বিচার চেয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত লিশালিনি জানান, তিনি মন্দিরে পূজা দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে উপস্থিত পুরোহিত তাকে পবিত্র পানি ছিটিয়ে দেওয়ার কথা বলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করান। এরপর অভিনেত্রী যখন অফিসের উদ্দেশে বের হচ্ছিলেন, তখন পুরোহিত হঠাৎ তার গায়ে ফুলের তীব্র গন্ধযুক্ত একটি তরল পানি ছিটিয়ে দেন।
‘আশীর্বাদ’র নামে শ্লীলতাহানি এরপরই ঘটে সেই ন্যক্কারজনক ঘটনা। লিশালিনি অভিযোগ করেন, তরল ছিটানোর পর পুরোহিত তাকে তার পরনের পাঞ্জাবি-স্যুট খুলতে বলেন। অস্বস্তিবোধ করায় তিনি তাতে রাজি হননি। তখন পুরোহিত মন্ত্রপাঠ শুরু করেন এবং আচমকাই লিশালিনির ব্লাউজের ভেতর হাত ঢুকিয়ে নোংরাভাবে স্পর্শ করতে থাকেন। পুরোহিত এটিকে ‘আশীর্বাদের অংশ’ হিসেবে বোঝানোর চেষ্টা করেন।
পোস্টে অভিনেত্রী আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি এর চেয়েও বড় ধরনের যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যা ভাষায় প্রকাশ করতে তিনি অক্ষম।
পুলিশি তদন্ত ও পুরোহিতের পলায়ন এই জঘন্য ঘটনার পর মালয়েশিয়ার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন লিশালিনি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। জানা গেছে, মন্দিরের প্রধান পুরোহিত অন্যত্র থাকায় অভিযুক্ত ব্যক্তি অস্থায়ীভাবে পূজার দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ ওঠার পর থেকেই তিনি পলাতক। পুলিশ তাকে খুঁজে বের করার জন্য অভিযান চালাচ্ছে।
মন্দিরের মতো পবিত্র স্থানে এমন ঘটনায় মালয়েশিয়াজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। নেটিজেনরা অভিযুক্ত পুরোহিতের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামসরা বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। বুদ্ধিজীবী হত্যার ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজীর নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের লক্ষ্যে সরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এদিন সকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ সময় তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধার অংশ হিসেবে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা এবং যুদ্ধাহত ও উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা একই দিনে সকালে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা আজ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
দিবসটি উপলক্ষে সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।
একাত্তরে ত্রিশ লাখ মানুষ শহীদ হন। এদের মধ্যে বেছে বেছে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঘটনা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তারা শহীদ হন এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী তাদের পরাজয় আসন্ন জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবী নিধনের এই পরিকল্পনা করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শহীদ জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার সহধর্মিনী বাসন্তী গুহঠাকুরতা তার একটি গ্রন্থে লিখেছেন, ‘নীল নকশার রেখা অংকন শুরু হয়েছিল একাত্তরের পয়লা মার্চের আগেই সত্তরের ১৭ ডিসেম্বর গণভোট বা তারো অনেক আগে উনসত্তরের গন আন্দোলনের সময় থেকেই, কিংবা বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের পরে। একাত্তরে তারা প্ল্যান করে যুদ্ধে নামে। যুদ্ধ তো নয়, কেবল নিরস্ত্র মানুষ নিধন। প্রথমে ওদের এলোপাতাড়ি মার, তারপর শহরে, গ্রামে-গঞ্জে বেছে বেছে ধনী, ব্যাবসায়ী, বুদ্ধিজীবী নিধণ করে নদীতে খালে ফেলে দেওয়া। অনেকে মনে করেন চরম বিপর্যয় আসন্ন, পরাজয় একেবারেই সন্নিকটে-তখনই তারা সেই পরিকল্পনা কার্যকর করে। তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে নিয়ে হত্যা করে। তারা স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে এভাবেই অন্ধকার করার পাঁয়তারা করেছিল।’
একাত্তরের সেই যুদ্ধাপরাধী ও বুদ্ধিজীবী হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকের বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত অনেকের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় ঘোষিত হয়েছে। মানবতাবিরোধী হত্যা মামলায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির কার্যকর হয়েছে। জামায়াতের অপর নেতা মো. কামারুজ্জামান এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার অন্যতম হোতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। ২০১৬ সালের ১১ মে মুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের নীলনকশা বাস্তবায়নকারী গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনীর প্রধান ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসর আল-বদরের সাহায্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সংস্কৃতি কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার বরেণ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করা হয়। পরে নিদারুণ যন্ত্রণা দিয়ে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাদের হত্যা করা হয়। এ দুটি স্থান এখন বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত।
মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আল-বদর বাহিনী আরও অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে স্থাপিত আল-বদর ঘাঁটিতে নির্যাতনের পর রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর কবরস্থানে নিয়ে হত্যা করে।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক মুনির চৌধুরী, ডা. আলিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বী, সিরাজ উদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক জিসি দেব, জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক রশীদুল হাসান, ড. আবুল খায়ের, ড.মুর্তজা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তাহের, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এস এ মান্নান (লাডু ভাই), এ এন এম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সেলিনা পারভিনসহ আরও অনেকে।
দেশের বাজারে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে ৩ হাজার ৪৫৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দুই লাখ ১৫ হাজার ৫৯৭ টাকা নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি, যা রোববার (১৪ ডিসেম্বর) থেকে কার্যকর হবে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস।
বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৯৭ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই লাখ ৫ হাজার ৮০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৪৬ হাজার ৮৩৮ টাকা।
এর আগে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৪ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই লাখ ২ হাজার ৪৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৭৩ হাজার ৫৭২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
বাজুস জানায়, স্বর্ণের বিক্রয় মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এদিকে স্বর্ণের দামের সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে রুপার দামও। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৪ হাজার ৫৭২ টাকা, ২১ ক্যারেট ৪ হাজার ৩৬২ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৩ হাজার ৭৩২ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা ৪ হাজার ২৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেট ৪ হাজার ৪৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির রুপা ২ হাজার ৬০১ টাকায় বিক্রি হয়ে আসছিল।