মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় আয়োজন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আগমন ও তিরোধানের এ দিনটি উপলক্ষে শুক্রবার পৃথক বাণীতে দেশ ও জাতির কল্যাণ ও শান্তি কামনা করেছেন তারা।
এবার ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন হচ্ছে শনিবার। হিজরি সনের ১২ রবিউল আউয়াল হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর পৃথিবীতে আগমন ও তিরোধানের দিনটি মুসলিম বিশ্বে ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পালন করা হয়।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, “…মহানবী (সা.) একটি সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সকলের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং মুসলমানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিষয়ে উম্মতদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং ইহকাল ও পরকালীন কল্যাণ নিশ্চিতে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতিটি কথা, কর্ম ও জীবনাদর্শ সকল মুসলমানের জন্য অবশ্য অনুসরণীয়।’
তিনি বলেছেন, “মহানবীর (সা.) জীবনাদর্শ আমাদের সকলের জীবনকে আলোকিত করুক, মহান আল্লাহর কাছে এ প্রার্থনা করি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে মহানবীর (সা.) সুমহান আদর্শ যথাযথভাবে অনুসরণের মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার তৌফিক দিন।”
ঈদে মিলাদুন্নবীর আয়োজনের মধ্য দিয়ে মুসলিম উম্মার ঐক্য আরও সুসংহত হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বাণীতে তিনি বলেছেন, “পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সকলের মাঝে বয়ে আনুক অপার শান্তি ও সমৃদ্ধি। মহানবী (সা.) এর সুমহান জীবনাদর্শ লালন ও অনুসরণের মাধ্যমে আমাদের ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের সার্বিক কল্যাণ ও মুক্তি সুনিশ্চিত হোক- এ কামনা করি।”
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, সর্বশেষ নবী ও রসুল হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও ওফাতের পবিত্র স্মৃতি বিজড়িত ঈদে মিলাদুন্নবী সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত একটি দিন। এ উপলক্ষ্যে আমি দেশবাসীসহ সমগ্র মুসলিম উম্মাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “হযরত মুহাম্মদ (সা.) দুনিয়ায় এসেছিলেন ‘সিরাজাম মুনিরা’ অর্থাৎ আলোকোজ্জ্বল প্রদীপরূপে। সব ধরনের কুসংস্কার, অন্যায়, অবিচার, দাসত্ব ও পাপাচারের অন্ধকার থেকে মানুষকে মুক্তি ও আলোর পথ দেখাতে শান্তি, প্রগতি ও কল্যাণের বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “…তিনি বিশ্ব মানবতার জন্য যে অনিন্দ্য সুন্দর অনুসরণীয় শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন, তা প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষের জন্য মুক্তির দিশারি হিসেবে পথ দেখাবে। তার অনুপম জীবনাদর্শ, সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ আজকের এ দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে। ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে তার আদর্শ ও সুন্নাহ বিশ্ববাসীর জন্য উৎকৃষ্ট অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়। এর মধ্যেই মুসলমানদের জন্য অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।”
ঈদে মিলাদুন্নবীতে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
তবে, জরুরি পরিষেবার আওতায় থাকা বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাকসেবা, হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহনসহ সংশ্লিষ্ট যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির বাইরে থাকবেন।
এ ছাড়া জরুরি দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রেও এ ছুটি প্রযোজ্য হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা