এত বড় তারকা হয়েও হামজার মধ্যে বিন্দুমাত্র অহংকার নেই : পাপ্পু

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ১৯, ২০২৫ | ৪:২২ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

বাংলাদেশ জাতীয় দলের গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের দলের নিয়মিত মুখ তিনি। সবশেষ ভারত ম্যাচেও দলের সঙ্গে ছিলেন পাপ্পু। একাদশে জায়গা না হলেও ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করেছেন বর্তমান সময়ে দেশের সবচেয়ে বড় তারকা হামজা চৌধুরীর সঙ্গে। তারকা এই ফুটবলারের নিরহংকারিতা মুগ্ধ করেছে পাপ্পুকে। আলাপকালে পাপ্পু বলেছেন বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়েও। প্রশ্ন : ভারতের বিপক্ষে ২২ বছর পর জয়। সেই দলের অংশ হতে পেরেছেন। অনুভূতি কেমন? এত বড় তারকা হয়েও হামজার মধ্যে বিন্দুমাত্র অহংকার নেই : পাপ্পু বিপিএল: বিশ্বকাপজয়ী মারকুটে ব্যাটারকে দলে ভেড়ানোর ইঙ্গিত ঢাকার পাপ্পু : দলের একজন সদস্য হিসেবে এবং ২২ বছর পর এমন ঐতিহাসিক জয়ের অংশ হতে পারাটা আমার জন্য চরম গর্বের। ড্রেসিংরুম থেকে শুরু করে বেঞ্চে বসে ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত অনুভব করেছি। শেষ বাঁশি বাজার পর দলের সবার মধ্যে যে বাঁধভাঙা উল্লাস দেখেছি, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। খেলোয়াড় হিসেবে আমরা সবাই জানি এই জয়টা দেশের ফুটবলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই জয়ের সাক্ষী হিসেবে দলের পাশে থাকতে পারা এবং পরিবেশটা অনুভব করতে পারাটাই আমার কাছে বিশাল প্রাপ্তি। আমার কাছে মনে হচ্ছে, আমি যেন ২২ বছরের অপেক্ষার অবসান দেখলাম। এই দলটার অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। প্রশ্ন : দীর্ঘদিন ধরেই ফুটবল খেলছেন। ফুটবল নিয়ে এমন উন্মাদনা আগে দেখেননি নিশ্চয়ই। কেমন লাগছে? পাপ্পু : হ্যাঁ, এটা সত্যি। দীর্ঘদিন ধরে ফুটবল খেলছি, কিন্তু ভারত ম্যাচের পর স্টেডিয়াম এবং পুরো দেশে যে ধরনের উন্মাদনা দেখছি, তা আগে দেখিনি। হাজার হাজার দর্শক স্টেডিয়ামে যেভাবে গলা ফাটিয়েছে এবং আমাদের সমর্থন দিয়েছে, তা অবিশ্বাস্য! এই জনসমর্থন আমাদের ফুটবলের জন্য কতটা দরকারি, সেটা এই জয় প্রমাণ করে দিয়েছে। একজন খেলোয়াড় হিসেবে এটা দারুণ অনুপ্রেরণা দেয়। এই উন্মাদনা যেন ফুটবলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনছে, এমনটাই মনে হচ্ছে। প্রশ্ন : বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়ে কী বলবেন? দলের পরিকল্পনা কী ছিল আর আপনার দৃষ্টিতে টার্নিং পয়েন্ট কোনটি? পাপ্পু : ভারত ম্যাচটা ছিল মর্যাদার লড়াই। ম্যাচের আগে আমাদের মূল পরিকল্পনা ছিল রক্ষণে সুশৃঙ্খল থাকা এবং প্রতি-আক্রমণ থেকে সুযোগ তৈরি করা। কোচ জোর দিয়েছিলেন যেন আমরা নিজেদের পজিশন ধরে রাখি এবং ভারতের ফরোয়ার্ডদের কোনো ফাঁকা জায়গা না দিই। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলব শেখ মোরসালিনের গোলটি। ম্যাচের একদম শুরুর দিকেই ওই গোলটা আমাদের আত্মবিশ্বাস আকাশচুম্বী করে দেয়। তবে, আমার দৃষ্টিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট ছিল প্রথমার্ধে হামজা চৌধুরীর সেই অবিশ্বাস্য গোল-লাইন সেভ। যদি ওই গোলটা হয়ে যেত, তবে ম্যাচের মোমেন্টাম সম্পূর্ণ বদলে যেত। ওই সেভটা আমাদের জয় নিশ্চিত করার পথে অন্যতম প্রধান ভূমিকা রেখেছে। প্রশ্ন : হামজা চৌধুরীর সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করেছেন। সতীর্থ হিসেবে আপনি তাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? পাপ্পু : হামজা একজন অসাধারণ মানুষ এবং একজন বিশ্বমানের খেলোয়াড়। এত বড় তারকা হয়েও তার মধ্যে বিন্দুমাত্র অহংকার নেই। ড্রেসিংরুমে সে খুবই মিশুক, সবসময় স্থানীয় খেলোয়াড়দের সাথে কথা বলে এবং সবার মনোবল চাঙা রাখে। সতীর্থ হিসেবে তিনি খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক। তার পেশাদারত্ব আমাদের অনেক কিছু শেখায়। ওর মতো একজনকে কাছ থেকে পাওয়া আমাদের জন্য গর্বের। প্রশ্ন : জাতীয় দলে একসাথে, একই সময়ে খেলছেন আপনি ও আপনার বড় ভাই। এই অনুভূতি কেমন? পাপ্পু : জাতীয় দলে বড় ভাইয়ের সাথে একসাথে খেলাটা সত্যিই অন্যরকম এক বিশেষ অনুভূতি। এটা আমার এবং আমাদের পরিবারের জন্য অনেক গর্বের বিষয়। ছোটবেলা থেকে আমরা একসাথে ফুটবল খেলে বড় হয়েছি, একে অপরের খেলার সমালোচনা করেছি এবং সবসময় সমর্থন দিয়েছি। এখন দেশের সেরা মঞ্চে একই জার্সি পরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা—এটা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। মাঠে ভাই হিসেবে নয়, বরং সতীর্থ হিসেবেই আমরা একে অপরের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকি এবং একজন আরেকজনকে সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করি।