নতুন যুদ্ধ কৌশল ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’, এটা আসলে কী

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ২৪, ২০২৫ | ৭:১১ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

পূর্ব ইউরোপে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ যখন চলছে পূর্ণ শক্তিতে, তখন পশ্চিমা বিশ্ব ধারণা করছে এর আড়ালে শুরু হয়েছে আরও এক গোপন সংঘাত। বহু ইউরোপীয় নেতা মনে করছেন, রাশিয়া এবার কামান বা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে নয়, বরং এক অস্পষ্ট এবং ধূসর কৌশল অবলম্বন করে সরাসরি ইউরোপকেই লক্ষ্যবস্তু করছে। নতুন এই যুদ্ধ কৌশল আসলে কী? গোপন যুদ্ধের প্রমাণ হিসেবে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি বেলজিয়ামের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপর দিয়ে রহস্যজনক ড্রোন উড়তে দেখা গেলে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। এই হুমকি মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি একযোগে কথা বলে। এর জেরে ব্রাসেলস বিমানবন্দরে কিছুক্ষণের জন্য ফ্লাইট চলাচলও বন্ধ রাখতে হয়। এদিকে মলদোভায় বিজয়ী দলের নেতা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনে ব্যাপক হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনেছেন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন এই ঘটনাগুলোকে কোনো বিচ্ছিন্ন বিষয় মানতে নারাজ। উরসুলা স্পষ্ট জানিয়েছেন, এইগুলো সুপরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যমূলক কার্যক্রম। তার মতে এর লক্ষ্য হলো ইউরোপের নাগরিকদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করা, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বিভক্ত করা এবং ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপের সমর্থনকে দুর্বল করে দেওয়া। এই সুপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক কর্মকাণ্ডকেই তিনি হাইব্রিড যুদ্ধ বলেছেন। সামরিক কৌশলবিদরা হাইব্রিড যুদ্ধকে বলেন, অস্পষ্ট কর্মকাণ্ড যা যুদ্ধ এবং শান্তির মাঝামাঝি অবস্থা। এই কৌশলে কাউকে সরাসরি দায়ী করা কঠিন, আবার এর প্রভাব এড়িয়ে যাওয়াও অসম্ভব। সাইবার আক্রমণ, আন্তর্জাতিক জলসীমাকে নিজের দাবি করে জাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টি, গুপ্তচরবৃত্তি, গুজব ছড়ানো বা ভুল তথ্য প্রচার এই সব কিছুই হাইব্রিড যুদ্ধের অংশ। এর ফলে অন্য দেশের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে না জড়িয়েও, তাদের জীবনকে চরম কঠিন করে তোলা সম্ভব। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কৌশলটি পুরোনো হলেও সম্প্রতি এর ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। এই আপাত-সাদামাটা যুদ্ধ যেকোনো সময়ই বিপজ্জনক দিকে মোড় নিতে পারে। এই অদৃশ্য যুদ্ধ মোকাবিলার জন্য বিশেষজ্ঞরা এখন একটি বহুমুখী পদ্ধতির প্রয়োজন বলে মনে করছেন। দেশগুলোকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যেন তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং ভোট প্রযুক্তির মতো সংবেদনশীল ক্ষেত্রগুলো সাইবার আক্রমণ থেকে পর্যাপ্তভাবে সুরক্ষিত থাকে।