অবয়ব থেকেই নির্ধারণ হবে রোগীর চিকিৎসা

প্রকাশিতঃ ডিসেম্বর ২২, ২০২৫ | ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

ভবিষ্যৎ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হবে কৃত্রিম মেধা (এআই)। চলতি বছরজুড়েই এ নিয়ে ছড়িয়েছে উন্মাদনা, সমালোচনা আর হাজারো বিতর্ক। বলতে গেলে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে সবকিছু। সুবিধা আর অসুবিধা হচ্ছে সেই বিতর্কের বৈরী দ্বৈরথ। কিন্তু এআই উন্মাদনা দমে যায়নি এতটুকুও; বরং নিজের বহুমাত্রিক সক্ষমতা প্রমাণ দিয়েছে কয়েক দফা। চিকিৎসাবিজ্ঞানে জাগিয়েছে নতুন সম্ভাবনা, যা এতদিন ভাবাও যায়নি। আগামীতে বয়স বলে দেবে চিকিৎসার ধরন। যে কারও বয়সের হিসাব বুঝবেন কীভাবে? উত্তর আসবে বছর গুনে। বিজ্ঞানের ভাষায় বয়স বলতে বোঝায় ক্রোনোলজিক্যাল এজ। যার মাপকাঠি হলো সময়। কিন্তু বয়স মাপার আরেকটি মানদণ্ড হলো বায়োলজিক্যাল এজ। যার পরিমাপ করেন ডাক্তাররা। নতুন খবর হলো, এবার এই কাজটাই করবে এআই, যার উৎস হবে সেলফি। অবাক করা তথ্য হলেও সত্যি কিন্তু এটিই। বিশেষ এআই টুল ফেসএজ এই কাজ করবে। যে কারও সেলফি বিশ্লেষণ করে বলে দেবে, তার বয়স আনুমানিক কত আর তিনি কী ধরনের রোগে ভুগছেন। কৃত্রিম মেধার রোগ নির্ণয় পদ্ধতি নিজে থেকেই বলে দেবে সেলফি ব্যক্তির বায়োলজিক্যাল এজ কেমন। মূলত ডিপ লার্নিং অ্যালগরিদম মেনে চলে বিশেষ এই এআই মডেল। মডেলের প্রধান চালিকাশক্তি হলো ছবি বিশ্লেষণ করে বলে দেওয়া, কী সমস্যা রয়েছে সেলফির ভেতরে। মডেলের মূল কাজের ভিত্তি মূলত দি আইবল পরীক্ষা। ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার পরই তিনি রোগীকে প্রাথমিক দেখে বলে দেন, তার প্রধান সমস্যা কোথায়। একে বলে ডাক্তারের ক্লিনিক্যাল আই। এভাবে সরাসরি সাক্ষাতে যে কোনো ডাক্তারই রোগীর প্রথম ধাপে রোগ নির্ণয় করেন। মুখাবয়ব দেখেই প্রাথমিক ধারণা করেন। কারণ, চেহারা দেখেই ডাক্তাররা অনেক কিছু বুঝে যান। ঠিক এই কাজটাই করছে ফেসএজ। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে একটি স্বাস্থ্য সংস্থা মডেলটি তৈরি করেছে। তারা বলছে, ডাক্তারের ক্লিনিক্যাল আইকে চ্যালেঞ্জ করা এই মডেলের কাজ নয়; বরং তিনি যেমন ভাবছেন, সেই ভাবনাকে যৌক্তিক করা। যার ভিত্তিতে চিকিৎসা শুরু করা। চলতি বছরের মধ্যভাগে এ-সংক্রান্ত রিসার্চ পেপার ল্যানসেট ডিজিটাল হেলথে প্রকাশিত হয়েছে। ইতোমধ্যে পাইলট স্টাডির কাজ চলছে। পরীক্ষামূলক সফল হলে বিশ্বের কয়েকটি দেশের হাসপাতালে এই মডেল ব্যবহৃত হবে। ডাক্তাররা এই মডেলের সব ধরনের সহায়তা নেবেন। মডেল উদ্ভাবক বলেছেন, ক্যান্সার চিকিৎসায় অনেক ভালো কাজ করবে এই মডেল। ইতোমধ্যে কয়েকটি দেশের বেশ কিছু ক্যান্সার রোগীর এই মডেলের সফল প্রয়োগ করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়েছে। তাই সব মিলিয়ে বলা যায়, চিকিৎসার উদ্দেশ্যে চেম্বারে যাওয়ার পর ডাক্তার যেভাবে রোগীর সরাসরি সাক্ষাতে রোগ নির্ণয় ও নিরাময় করেন, সেই কাজ করে দেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এতে ডাক্তারের গুরুত্ব কোনো অংশে কমবে না; বরং পরীক্ষিত ক্রস চেক করতে পারবেন, তিনি যা ভাবছেন, তা কতটা ঠিক ভাবছেন? ফলে ডাক্তারের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে এআই। এটিই মডেলের প্রধান লক্ষ্য।