অনলাইনে অপতথ্য ও বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে কাজ করেন এমন পাঁচ ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। স্টেট ডিপার্টমেন্টের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়েছে, এসব ব্যক্তিরা ‘আমেরিকান দৃষ্টিভঙ্গি’ দমনের চেষ্টা করেছেন।
যাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তাদের মধ্যে চারজন সামাজিক মাধ্যমে অপতথ্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে কাজ করা সংস্থার শীর্ষ পদে আছেন। আরেকজন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাবেক কমিশনার। তারা সবাই ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নাগরিক।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ‘র্যাডিক্যাল অ্যাক্টিভিস্ট’। তারা আমেরিকান বক্তা ও কোম্পানির বিরুদ্ধে সেন্সরশিপ জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছেন। এক্সে দেওয়া পোস্টে রুবিও লিখেছেন, ইউরোপের এই আদর্শবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। উদ্দেশ্য ছিল তাদের (পাঁচ ব্যক্তি) অপছন্দের আমেরিকান মতাদর্শ দমন করা। ট্রাম্প প্রশাসন এ ধরনের সেন্সরশিপ আর সহ্য করবে না।
ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ব্যক্তিরা হলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ বাজার বিষয়ক সাবেক কমিশনার ও ফ্রান্সের নাগরিক থেরি বোতোঁ, যুক্তরাজ্যের সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেট- এর প্রধান নির্বাহী ইমরান আহমেদ, গ্লোবাল ডিসইনফরমেশন ইনডেক্স (জিডিআই) এর প্রধান ক্লেয়ার মেলফোর্ড এবং জার্মান সংগঠন হেটএইডের জোসেফিন ব্যালন ও আনা-লেনা ফন হোডেনবার্গ।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি সারা রজার্সের মতে, ফ্রান্সের নাগরিক থেরি বোতোঁ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট (ডিএসএ) তৈরির মূল পরিকল্পনাকারী। ডিএসএ মূলত, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ঘৃণামূলক বক্তব্য, ভ্রান্ত তথ্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তি মোকাবিলার লক্ষ্যে প্রণীত আইন।
গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে প্রচার চালান মার্কিন ধনকুবের ও সামাজিক মাধ্যম এক্সের মালিক ইলন মাস্ক। সারা রজার্সের অভিযোগ, ওই সময় ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট ব্যবহার করে ইলন মাস্ককে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বোতোঁ।
এক্সে দেওয়া এক পোস্টে থেরি বোতোঁ ভিসা নিষেধাজ্ঞাকে ‘উইচ হান্ট’ বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়ন আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বিষয়টির তুলনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকার্থি যুগের সঙ্গে। যে সময় সাম্যবাদ বা কমিউনিজমের সঙ্গে কথিত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বহু কর্মকর্তাকে সরকারি পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
ইউরোপীয় কমিশনও যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এক্সে দেওয়া পৃথক পোস্টে নিন্দা জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।