রায় শুনে বাবা বললেন, আলহামদুলিল্লাহ

প্রকাশিতঃ মার্চ ১৫, ২০২৩ | ৬:১১ অপরাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

বুধবার দুপুর ১টা। কর্মস্থল ঝিনাইদহের শৈলকূপা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে বসে আছেন দেলোয়ার হোসেন। রোববার তার দুই ছেলে মোস্তফা সাফিন (৭) ও মোস্তফা আমিন (১০) ও ভাগিনা মাহিন হাসানকে (১২) পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায়ের দিন ঠিক ছিল। কিন্তু তা জানতেন না দেলোয়ার। রায়ের অনুভূতি জানতে দেলোয়ারকে ফোন করলে তিনি আঁতকে ওঠে বলেন, আমি তো জানি না ভাই, কী রায় হয়েছে? হত্যাকারী আপন ভাই ইকবালের মৃত্যুদণ্ডের কথা শুনে আলহামদুলিল্লাহ বলে বাকরুদ্ধ হয়ে যান তিনি। কিছুক্ষণ পর বলেন, একটু পরে কথা বলছি। হৃদয় বিদারক এ ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি পৌর এলাকার কবিরপুর গ্রামে। ইকবাল ও দেলোয়ার কবিরপুর গ্রামের সার ব্যবসায়ী গোলাম নবীর ছেলে। জানা যায়, শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন একসময় বিদেশে থাকতেন। দেশে ফিরে বাবা গোলাম নবীর কাছে বিদেশ থেকে পাঠানো টাকার হিসাব চান তিনি। এ নিয়ে প্রায়ই বাবা-ছেলের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হতো। দণ্ডপ্রাপ্ত ইকবালের বাবা-মা তার ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে বসবাস করতেন। টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে তাদের হত্যা করাসহ নানা হুমকি দিতেন ইকবাল। এরই একপর্যায়ে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ইকবাল হোসেন তার ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মোস্তাফা সাফিন (৯) ও মোস্তফা আমিন (৭) ও বোন জেসমিন আক্তারের ছেলে মাহিনকে (১২) মোবাইল ফোনে কার্টুন দেখানোর কথা বলে নিজের ঘরে ডেকে নেন। ঘরে নেওয়ার পর তাদের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন ইকবাল। ওই তিন শিশুকে সেফটি বেল্ট দিয়ে জানালায় বেঁধেও রাখেন তিনি। পরে ঘরে রাখা গ্যাসের সিলিন্ডারের মুখ খুলে আগুন ধরিয়ে দেন ইকবাল। সেই আগুনে পুড়িয়ে মারা যায় ওই তিন শিশু। শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার ভাই উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছেন। যা হয়েছে এটা তো আর ফিরে পাব না। প্রশাসন ইকবালকে আটক করে রায় কার্যকর হলেই আমি শান্তি পাবো। এদিন দুপুর সাড়ে ১২টায় তিন শিশুকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ইকবাল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নাজিমুদ্দৌলা এ রায় দেন।