রোজায় দাম বেড়েছে কলার। ইফতারের এ ফলের দাম গত দুই-তিন দিনে ডজনে ২০ টাকার মতো বেড়েছে। পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে বলে জানান খুচরা ব্যবসায়ীরা। অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে লেবুরও। ভোক্তাদের অভিযোগ, রোজার উসিলায় সব জিনিসের দাম বাড়ানো হয়েছে। সাধারণত চা দোকানে কলা খুচরো কিনতে পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে দাম কিছুটা বেশি রাখেন দোকানিরা। ডজন আকারে কিনলে অনেক সময় কিছুটা কম দামে পাওয়া যায়। কিন্তু এ আশা এখন অতীত। সব ধরনের কলার দামই বেড়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও ফকিরাপুল এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুচরা পর্যায়ে মাঝারি আকারের সাগর কলার ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। এক হালি কিনতে গুনতে হবে ৬০ টাকার মতো। দুই-তিন দিন আগেও এ কলার দাম ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। মাঝারি আকারের বাংলা কলা ও সবরি কলার ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। এতদিন এ জাতের কলা কেনা গেছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। বেড়েছে চম্পা কলার দামও। ডজনে ১০ টাকার মতো বেড়ে এ জাতের কলা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। শুধু কলা নয়, দেশি ফল আনারস-কমলার দামও বেড়েছে। আপেল, মাল্টা, খেজুর, নাশপাতিসহ বিদেশি ফলের দাম বাড়ার কারণেই দেশি ফলের দাম বেড়েছে বলে জানান খুচরা ব্যবসায়ীরা। দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা ক্ষোভ ঝাড়েন বিক্রেতাদের ওপর। গতকাল বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলা কলার দাম ১২০ টাকা শুনে সায়লা আহমেদ নামের এক ক্রেতা দোকানিকে বলেন, ‘রোজার সুযোগ আর কতদিন নেবেন? এত ছোট কলার দাম কীভাবে এত টাকা চাইলেন?’ জবাবে বিক্রেতা নুর হোসেন বলেন, ‘ম্যাডাম, আমাদের বলে লাভ নাই। পাইকারি বাজারে একবার যেয়ে দেখে আসেন দাম কেমন।’ দাম বাড়ার বিষয়ে তেজগাঁও কলার পাইকারি ব্যবসায়ী এরশাদ হোসেন বলেন, নরসিংদী, যশোর, কুষ্টিয়া, নাটোর, ফরিদপুর, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকে রাজধানীতে কলা আসে। এখন পরিবহন খরচ বেড়েছে। রাস্তায় বিভিন্ন খরচ আছে। তাছাড়া সব জিনিসের দাম বাড়তি। কৃষক পর্যায়ে দাম বেড়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীদেরও তো লাভ করতে হবে। দাম না বাড়ালে তাদের ব্যবসা টিকবে কীভাবে? তাছাড়া আমদানি করা ফলের কারণেও দেশি ফলের দাম বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি। এদিকে অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি লেবুর বাজারে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এর পরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইফতারের শরবত তৈরির অন্যতম এ উপাদান। খুচরা ব্যবসায়ীরা মোটামুটি বড় আকারের এক হালি লেবু বিক্রি করছেন ৭০ টাকার আশপাশে। সে হিসাবে প্রতিটির দাম পড়ছে ১৭ থেকে ১৮ টাকা। তবে ছোট আকারের লেবু ৪০ থেকে ৬০ টাকা হালিতে পাওয়া যাচ্ছে। আট-দশ দিন আগেও শসার কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। রোজার দু’দিন আগে হঠাৎ শসার দাম কেজিতে দাঁড়ায় ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। সেই দামেই এখনও বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি। তবে ধনেপাতার দাম মোটামুটি নাগালের মধ্যে দেখা গেছে। কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকায়। এ ছাড়া পাঁচ-ছয় দিন আগে বেড়ে যাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে বেগুন। প্রতি কেজি বেগুনে ক্রেতার খরচ পড়বে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।