সংলাপের জন্য বিএনপিকে নির্বাচন কমিশনের চিঠি দেওয়ার বিষয়টি সরকারের নতুন কৌশল বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, অতীতে কেউ ভোট দিতে পারেনি। আবার তারা ওই কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। এবার সারাবিশ্ব থেকে চাপ বাড়ছে। গণতান্ত্রিক দেশগুলোর চাপে সরকার নতুন নতুন কৌশল বের করছে। সংলাপের জন্য নির্বাচন কমিশনের চিঠি দেওয়ার ঘটনাও সেই কৌশলের অংশ। গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে বিএনপি আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নির্বাচন কমিশনের চিঠির বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই কমিশনের ক্ষমতা নেই কিছু করার। অতীতে নির্বাচন কমিশন শুধু প্রশিক্ষণ বাবদ কোটি কোটি টাকা খেয়ে ফেলেছে। এই রকম কিছু আছে কিনা আপনারা সেগুলো দেখেন। অযথা জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথা বলে নিজেকে খাটো করবেন না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সারাবিশ্ব বলছে আগের মতো ভোট আর চলবে না। জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আগের রাতে ভোট হয় তা এর আগে কোথাও শোনেননি। এখন সংকট একটাই। সেই সংকট হচ্ছে, নির্বাচনকালীন সরকারে কে থাকবে? যদি আওয়ামী লীগ থাকে তাহলে নির্বাচন কোনো দিনই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হবে না, এটা প্রমাণিত। শুধু জাতীয় সংসদে নয়, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়নি। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তাই আসল জায়গায় কাজ করুন, সেটা নিয়ে কথা বলুন, সেটা নিয়ে ঘোষণা দিন। তা না হলে অন্য কোনো কিছু দেশের মানুষ মেনে নেবে না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের ঘোষণা দিতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে নয়, জনগণকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়ার সুযোগ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মেনে নিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে হবে আওয়ামী লীগকে। তারা মুখে গণতন্ত্র ও ভোটের কথা বলবে আর প্রশাসনকে যেভাবে বলবে সেভাবে চলবে। আবারও একই পাঁয়তারা হচ্ছে। যারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে, তারা ভয়ংকর মিথ্যা ইতিহাস দীক্ষা দিচ্ছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতার চেতনা কি চুরি করা? লুট করে ভোট কেড়ে নেওয়া? সিন্ডিকেট করে রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করা? দেশকে রক্ষার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে নেতাকর্মীকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, একটি দল ক্ষমতায় থাকার জন্য মানুষের কথা বলার অধিকার, গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে। বিশ্বে বাংলাদেশকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ও সহপ্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম খান আলিমের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক প্রমুখ বক্তব্য দেন।