পাঁচ বছর আগে জাকাত সংগ্রহে তহবিল চালু করে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর। শরণার্থীদের জন্য চালু করা এ তহবিলে মুসলিমদের অনুদান ব্যাপকভাবে বাড়ছে। ২০১৭ সালে চালুর পর এখন পর্যন্ত জাকাত হিসেবে ২০ কোটি ডলার পেয়েছে সংস্থাটি। গত বছর জাকাত হিসেবে ২ কোটি ১৩ লাখ ডলার এবং সদকা হিসেবে ১ কোটি ৬৭ লাখ ডলার পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া মোট অনুদানের অর্ধেকই এসেছে একজন ব্যক্তির কাছ থেকে। ইউএনএইচসিআরের উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের দেশগুলোর প্রতিনিধি খালেদ খালিফা জেনেভায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত বছর আমরা রমজানে ২ কোটি ডলারের বেশি সংগ্রহ করতে পেরেছি। আশা করছি এই রমজানে আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। খালেদ খালিফা বলেন, জাকাত ও সদকা থেকে গত পাঁচ বছরে আমরা মুসলিমপ্রধান দেশগুলোয় ৬০ লাখ মানুষকে সহায়তা দিতে পেরেছি। জাকাত তহবিলের সবচেয়ে বেশি অর্থ বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী, ইয়েমেনে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার মানুষ এবং লেবাননে সিরিয়ার শরণার্থীদের কার্যক্রমে খরচ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২৬টি দেশে থাকা শরণার্থীদের জন্য তহবিলের অর্থ খরচ করেছে সংস্থাটি। মুসলিমপ্রধান দেশে এই অর্থ পাঠানো হলেও অনুদানের টাকা শুধু মুসলিমদের জন্য খরচ হয় না বলে জানান খালেদ খালিফা। সুবিধাভোগীদের তাঁরা ধর্ম দিয়ে বিভাজন করেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হিসেবে বিবেচিত জাকাত। বিধান অনুযায়ী, প্রতি বছর মুসলিমদেরকে তাঁদের সঞ্চয় ও সম্পদের আড়াই শতাংশ জাকাত দিতে হয়। ইউএনএইচসিআরের জাকাত তহবিলের পরিমাণ বাড়লেও শরণার্থী সংস্থাটির কয়েকশ কোটি ডলারের বাজেটের তুলনায় তা যৎসামান্য। খালেদ খালিফার ভাষ্যে তা ‘সমুদ্রে এক ফোঁটা পানির সমান মাত্র’। তাছাড়া জাকাত তহবিলে মোট অর্থের ১১ কোটি ডলার বা অর্ধেকের বেশি দিয়েছেন কাতারের বিনিয়োগকারী শেখ থানি বিন আবদুল্লাহ বিন থানি আল-থানি। খালিফা মনে করেন, বিশ্বে শরণার্থী ইস্যুতে অবদান রাখতে চাওয়া ব্যক্তি পর্যায়ের দাতাদের জন্য তহবিলটি একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে। এ ক্ষেত্রে বড় দাতাদের পরিবর্তে ছোট ছোট অবদান রাখতে পারা ব্যক্তি পর্যায়ে বিরাট সংখ্যক দাতার ওপরই বেশি নির্ভর করতে চান তাঁরা।