সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। ওমরাহ শেষে মদিনা থেকে মক্কা যাওয়ার পথে গতকাল শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সাগর জোমাদ্দার (২৪) বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের উত্তর হোসনাবাদ গ্রামের মোতাহার জোমাদ্দারের ছেলে এবং মোজাম্মেল হোসাইন (৪৮) পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ছৈলাবুনিয়া গ্রামের মৃত আজিজ মৃধার ছেলে। নিহতরা সম্পর্কে শ্যালক-দুলাভাই। শ্যালক-দুলাভাইয়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে বেতাগী ও মির্জাগঞ্জে তাদের গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ভাগ্য বদলের আশায় সৌদি আরবে গিয়ে তাদের লাশ হয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের লাশ দেশে আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা। নিহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ তারা সৌদি আরবের আলগাছিমের উনাইয়া থেকে মদিনায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করতে যান। মহানবীর রওজা জিয়ারত শেষে গতকাল শনিবার রাতে মক্কার উদ্দেশে রওনা হন তারা। এসময় তাদের গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সাগরের স্ত্রী শান্তা আক্তার চিৎকার করে কাঁদছিলেন। তাঁদের কান্না দেখে আশপাশের মানুষও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে শান্তা জানান, তাঁদের অনেক স্বপ্ন ছিল। সব শেষ হয়ে গেছে। সাগরের বাবা মোতাহার জোমাদ্দার বলেন, আমার আদরের সন্তান বাড়িতে আসার জন্য টাকা জমিয়েছিল। এখন আর টাকা দিয়ে কী হবে? মেঝো ভাই সুমন জোমাদ্দার জানান, পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তাঁরা আজ দিশেহারা। হোটেল ব্যবসার পরিধি বাড়াতে কয়েক মাস আগে ঋণ ও ধারদেনা করে দেশ থেকে ৪৫ লাখ টাকা পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তাঁরা সব হারিয়ে নিঃস্ব। জানা গেছে, নিহত দু’জনের মরদেহ সৌদি আরবের একটি সরকারি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ বাংলাদেশে আনার চেষ্টা চলছে। বড় ভাই উজ্জ্বল জোমাদ্দার মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, মারা যাওয়া দুই প্রবাসীর লাশ দেশে আনার জন্য সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে সরকারের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।