রমজান মাসের পঞ্চম দিন আজ। এরই মধ্যে জমে উঠেছে কলকাতার ইফতারির বাজার। মুসলিমদের পাশাপাশি হিন্দুদেরও দেখা মিলছে ইফতারের বাজারে। বিকেল থেকে সন্ধ্যার আগমুহূর্ত পর্যন্ত ভিড় লেগে থাকে এসব বাজারে। উত্তর কলকাতার চিৎপুরের নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন জাকারিয়া স্ট্রিট, কলুটোলা অথবা বাংলাদেশি অধ্যুষিত মধ্য কলকাতার নিউমার্কেট থেকে শুরু করে পার্ক সার্কাস, রাজাবাজার, মেটিয়াবুরুজের বিভিন্ন রাস্তায় সাজানো ইফতারির নানা খাবারের পসরায়। দুপুর থেকে শুরু হয় কেনাবেচা। ইফতারের সময় যত ঘনিয়ে আসে, বিক্রেতাদের ব্যস্ততা, হাঁক-ডাক ততই বাড়ে। কলকাতার নামিদামি রেস্তোরাঁর সঙ্গে ইফতারির খাদ্যপণ্যের বিষয়ে রীতিমত পাল্লা দেয় কয়েকশ মৌসুমি ব্যবসায়ী। উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত সমাজের সবস্তরের মানুষের চাহিদা অনুয়ায়ী থাকে ইফতারের নানা আয়োজন। হালিম, লাচ্ছা সেমাই, কাবাব, ফিরনি, ফালুদা। নানা ধরনের ফল, খেঁজুর, কাজু, কিসমিস, ড্রাই ফ্রুট, ছোলা,পকোড়া, স্যালাডের আয়োজন। অল্প দামেই পাওয়া যায়, জিলাপি, সিঙ্গারা, চিকেন-মটন কষা, পেঁয়াজু, বেগুনি, শাহি বাখরখানি, বিশেষভাবে তৈরি নান-রুটি, হালিম কিংবা সুস্বাদু আম-কাঁঠাল-জামসহ নানা ফল; আর তা দিয়ে তৈরি জুস। কলকাতার ইফতারি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে খাদ্য-পণ্যের দাম সাম্প্রতিক সময়ে বাড়েনি। দাম নাগালের মধ্যে থাকায় তারাও খুচরো বাজারে ইফতারি পণ্যের দাম রাখছেন ক্রেতার স্বার্থের মধ্যেই। করোনার দু\'বছর মন্দা কাটিয়ে চলতি রমজানে তাই ফের ব্যবসা ফিরে পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন তারা। রেহান খান নামে পার্ক সার্কাসের এক ক্রেতা বলেন, বাজার এখনও স্বাভাবিক। তবে সেখানকার খাইরুল ইসলাম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, মধ্যবিত্তদের জন্য বাজারে বাড়তি দাম সমস্যা হবে না, তবে বিপদে পড়বে নিম্নবিত্তরা। ক্রেতাদের দাবি, ইফতারি বাজারে ঢুকেই দামের ছ্যাকা খাচ্ছেন তারা। দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে এক-পা এগিয়েও দু-পা পিছিয়ে আসছেন তারা। সাবির আহমেদ নামে এক ক্রেতা জানান, \'ফলের দাম বেড়েছে। ফলে সমস্যাও বেড়েছে। আর সেই কারণে কম পরিমানে কিনতে হচ্ছে। স্বাভাবিক খাদ্যের পরিমানও কমিয়ে দিতে হচ্ছে। আগে ১০ রুপিতে চারটা কলা পেলেও এখন ওই রুপিতে মাত্র তিনটা কলা মিলছে। আপেলের কেজি ১৬০ রুপি, তরমুজ ৩০ রুপি, আঙ্গুর ১০০ রুপি, কলা (১২ পিস) ৫০ থেকে ৬০ রুপি, সেমাই প্রতি কেজি ১৮০ রুপি। তবে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে ফেলেছে মুরগির দাম। গেল কয়েক মাস ধরে কলকাতায় বয়লার মুরগির মাংস প্রায় ২২০ রুপি, দেশি মুরগি কেজিপ্রতি ৪০০ রুপি। সেমাই বিক্রেতা নওশাদ জানান, সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১৮০ রুপি কেজি। সব জিনিসের দাম বেড়েছে। গরিব মানুষের অসুবিধা হবে।