শব্দের তুলনায় তিনগুণ বেশি গতিসম্পন্ন, রাশিয়ার সুপারসনিক মিসাইল- মসকিট। পশ্চিমা সামরিক জোট- ন্যাটোর তালিকায় যার সাংকেতিক নাম ‘এসএস-এন-২২ সানবার্ন’। আড়াইশো কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম সোভিয়েত আমলের এ ক্ষেপণাস্ত্রটি। জাপান সাগরে এখন সেটিরই মহড়া চালাচ্ছে রাশিয়া। এছাড়াও তারা মাঠে নামিয়েছে ‘ইয়ার্স’ মিসাইল সিস্টেমও। পারমাণবিক শক্তিধর রাশিয়ার ‘অজেয় সমরাস্ত্র’ হিসেবেই পরিচিত এটি। এটিকে ঘিরে সামরিক প্রশিক্ষণে যোগ দিয়েছে ৩ হাজার সেনা সদস্য, রয়েছে ৩০০ ছোটবড় অস্ত্র-সমরযানও। এ প্রসঙ্গে রুশ মিসাইল রেজিমেন্ট কমান্ডার কালগায়েভ ইয়েভগেনি বলেন, রুশ প্রতিরক্ষা সদর দফতরের নেতৃত্বেই কৌশলগত এ সামরিক মহড়া চালাচ্ছে মিসাইল রেজিমেন্ট। এরই ধারাবাহিকতায়, ইয়ার্স মিসাইল সিস্টেম মাঠে নামানো হলো। ঝাঁলিয়ে নেয়া হচ্ছে শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে আমাদের সৈন্যদের লড়াইয়ের সক্ষমতা। নতুন ও নাটকীয় মোড় নিচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল- মসকিটের মহড়া চালাচ্ছে রুশ নৌবহর। মাঠে নামিয়েছে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা- ইয়ার্সও। ইউক্রেনে অত্যাধুনিক পশ্চিমা ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান আসার পরই; শক্তিমত্তার জানান দিলো পুতিন প্রশাসন। অস্ত্র প্রস্তুত-মজুদ আর সরবরাহের পরিমাণ আরও ৭-৮ গুণ বাড়বে বলে হুমকিও দিয়েছে দেশটি। এদিকে, প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কির বিশ্বাস- রাশিয়া যতোই চাপ প্রয়োগ করুক না কেনো; চূড়ান্ত বিজয় ইউক্রেনেরই হবে। খবর সিএনএনের। তবে শুধু মহড়ায় সীমাবদ্ধ নেই রাশিয়া। খতিয়ে দেখছে অস্ত্র-গোলাবারুদের সক্ষমতাও। অস্ত্রের উৎপাদন আরও কয়েকগুণ বাড়ানোর সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে দেশটি। এ প্রসঙ্গে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেনকভ বলেন, চেলিয়াবিনস্ক ও কিরোভ অঞ্চলের অস্ত্র প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করেছেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কিভাবে ফ্রন্টলাইনে দাঁড়ানো সেনাদের হাতে গোলাবারুদ সরবরাহ করা যায়- সেটিই দেখেছেন তিনি। খুব শীঘ্রই রণক্ষেত্রে অস্ত্রের মজুদ বাড়ানো হবে। কারণ, ইউক্রেনীয় বাহিনীর কাছে পশ্চিমা সমরযান পৌঁছে গেছে। তাই, চলতি বছরই ৭-৮ গুণ বাড়বে রুশ সমরাস্ত্র উৎপাদনের পরিমাণ। এদিকে, নিজ অবস্থানে অনড় ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টও। জানিয়েছেন- যেকোনো মূল্যে বিজয় নিশ্চিত করবে তার দেশ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনীয়রা ভাঙ্গবে তবু মচকাবে না- এই বিশ্বাস নিয়ে যারা রণক্ষেত্রে লড়ছেন তাদের প্রতি স্যালুট। আমাদের অকুতোভয় সেনারা নাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়ার এতোদিনের দম্ভ; ফাটল ধরিয়েছে রুশ সাম্রাজ্যের দেয়ালে। পশ্চিমা মিত্ররা ইউক্রেনের পাশেই রয়েছে। আমাদের বিজয় নিশ্চিত। প্রসঙ্গত, সোমবার (২৭ মার্চ) বহুল আলোচিত জার্মান লেপার্ড-২ ট্যাংকের একটি বহর পৌঁছায় ইউক্রেনে। ১৮টি ট্যাংক গ্রহণ করে দেশটির সেনাবাহিনী। পাশাপাশি, কিয়েভের হাতে পৌঁছেছে ব্রিটিশ চ্যালেঞ্জার ট্যাংক, মার্কিন সাঁজোয়া যানসহ বিভিন্ন সমরাস্ত্র।