দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তুর্কিদের শাসন করছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। কিন্তু তার এ দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রায় এবার আর সমর্থক হিসাবে যোগ দিতে চাচ্ছেন না তুর্কির বর্তমান তরুণ প্রজন্ম। এছাড়াও নতুন অনেক ভোটার রয়েছেন যারা তাদের ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে তুরস্কে আর কোনো রাজনৈতিক দলের উত্থান দেখেননি। ২০০৩ সালে এরদোগান ক্ষমতায় আসার পর থেকে ৫.২ মিলিয়ন তুর্কি ভোট দেওয়ার বয়সে পৌঁছেছে। কিন্তু মাত্র আট শতাংশ ভোটার নির্বাচনের দিন প্রথমবার নিজেদের মত প্রকাশ করবে। ১৪ মে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। খবর ফ্রান্স টুয়েন্টিফোরের। এমনই এক তরুণ ভোটার ক্ষোভ ঝেড়ে এরদোগানের ২০ বছরের শাসন নিয়ে বলেন, ‘রাজনৈতিক এ ব্যাপারগুলো নিয়ে ভাবতে আমি দিন দিন ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি, এরদোগান ক্ষমতা থেকে সরে গেলে তরুণ প্রজন্ম স্বাধীনভাবে নিজেদের মতপ্রকাশ করতে পারবে।’ এছাড়াও সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৮-২৫ বছরের মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশ তুর্কি প্রেসিডেন্ট ও সংসদ নির্বাচনে এরদোগানের ইসলামিক পার্টিতে ভোট দেওয়ার পক্ষে সম্মতি জানিয়েছে। কোন্ডা পোলিং ইনস্টিটিউটের গবেষক এরমান বাকিরসি বলেছেন, ‘তরুণদের মধ্যে এরদোগানের ভোট কম, কারণ প্রথমবার ভোটাররা গড় ভোটারদের তুলনায় বেশি আধুনিক ও কম ধার্মিক এবং তারা অর্ধেকেরও বেশি।’ এছাড়াও এরদোগানের নিজের পরিচিতরাও তার বিপক্ষে বলতে পিছপা হননি। ১৯ বছর বয়সি গোখান সেলিক বলেন, ‘এরদোগানকে যেত্ইে হবে! আমার প্রতিবেশীরা তাকে ভোট দিলেও আমি দিচ্ছি না।’ ২১ বছর বয়সি টেক্সটাইল কর্মী মানুষের যত্ন নেওয়ার পরিবর্তে ইস্তাম্বুলে তৃতীয় বিমানবন্দর নির্মাণের বিষয়টিকে নিয়ে এরদোগানের বিরুদ্ধে কট্টর সমালোচনা করেন। আরও এক তরুণ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রার পতনসহ বছরের পর বছর অর্থনৈতিক অস্থিরতার জন্য এরদোগান আংশিক দায়ী। তুরস্কের দক্ষিণ সীমান্ত থেকে ইস্তাম্বুলে পলিয়ে যাওয়া ৩.৭ মিলিয়ন লোকের বেকারত্বের জন্যও এরদোগান দায়ী।’ সভজি নামে ইস্তাম্বুলের ইউপ শহরের এক মেয়ের দাবি, ‘এরদোগান আমার স্বপ্নের পথে বাধা, যদিও তিনি একজন ভালো প্রেসিডেন্ট। তবুও তার এত লম্বা সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়।’ প্রসঙ্গত অসুস্থতা কাটিয়ে শনিবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে এ বছরের প্রথম নির্বাচনি প্রচারে নামেন এরদোগান। এ সময় তাকে বেশ বেশ ফুরফুরে দেখাচ্ছিল। প্রিয় নেতার দেখা পেতে হাজার হাজার মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা কড়া রোদ উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে ছিল বন্দর নগরী ইজমি। তাদের হাতে ছিল তুরস্কের পতাকা। শহরটি বিরোধীদের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।