জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তা স্থানান্তর—রূপান্তরের মাধ্যমে আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর উত্তরা কর অঞ্চল—৯ এর কর্মকর্তা আবু হাসান মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী লাকী রেজওয়ানার বিরুদ্ধে প্রথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার (৩০ এপ্রিল) দুদকের গাজীপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে উপ—পরিচালক মোজাহার আলী সরদার দুর্নীতি দমন আইন এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এ দুটো মামলা করেন । একটি মামলায় একমাত্র আসামি খাইরুল ইসলাম এবং অপর মামলায় তার স্ত্রী লাকী রেজওয়ানাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে ও দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে স্বামী খাইরুল ইসলামকে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারাসহ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪(৩) এর ধারায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা ২ কোটি ৬৮ লাখ ২৯ হাজার ৮৭৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে খাইরুল ইসলাম ১ কোটি ৩২ লাখ ১ হাজার ৮৯৮ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করে দুদকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছেন। একইভাবে তার স্ত্রীও বিপুল সম্পদের তথ্য গোপন করেন। ঢাকার উত্তরায় কর অঞ্চল—৯ এর কর পরিদর্শক আবু হাসান মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর কমিশনে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। যেখানে তিনি মাত্র ২৮ লাখ ২৮ হাজার ২৭৭ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব জমা দেন। কিন্তু খাইরুল ইসলামের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় তার নামে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১৫ শতাংশ জমির ওপর ডুপ্লেক্স বাড়ির সন্ধান পায় দুদক। যার দালিলিক মূল্য পাওয়া যায় ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪৪ হাজার ২৪৫ টাকা। যা তিনি গোপন করার চেষ্টা করেছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এছাড়া স্ত্রী মিসেস লাকী রেজওয়ানার নামে সাব কবলা দলিল মূলে ক্রয় পরবর্তী নিজ নামে হেবা বিল এওয়াজ দলিলের মাধ্যমে অর্জিত ১৫ শতাংশ জমিসহ দোতলা (ডুপ্লেক্স) বাড়ি নির্মাণ ও দলিল নং—৪১৯৫/১৯ এর খরচসহ সর্বমোট ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪৪ হাজার ২৪৫ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। পরে সেটা নিজ নিয়ন্ত্রণে রাখা ও ঘুষ—দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত উক্ত অবৈধ সম্পদের উৎস আড়াল করার অসৎ উদ্দেশ্যে তার অবৈধ আয়ের প্রকৃত উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করার চেষ্টা করেন। সে জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে তার পিতা চাঁদ মিয়ার নামে আয়কর বিভাগে ভুয়াভাবে দেখিয়ে অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অপচেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনে দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে ১ কোটি ৪১ লাখ ১৭ হাজার ৬৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করে কমিশনে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছেন কর কর্মকর্তা আবু হাসান মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম ও স্ত্রী লাকী রেজওয়ানা। এছাড়াও ঘুষ—দুর্নীতির মাধ্যমে আয়ের অবৈধ উৎস আড়াল করার উদ্দেশ্যে আয়ের অবৈধ উৎস, প্রকৃতি, অবস্থান, মালিকানা নিয়ন্ত্রণ করার অসৎ উদ্দেশ্যে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে তারা দুই জন ২ কোটি ৬৮ লাখ ২৯ হাজার ৮৭৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারাসহ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) এর ধারায় প্রথক আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।