রত্না কবির সুইটি- ২০০২ সালে ক্লাস সেভেনে পড়া অবস্থায় ‘কেন ভালোবাসলাম’ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে নাম লেখান। সেলিম আজম পরিচালিত এ ছবিতে ফেরদৌসের বিপরীতে অভিনয় করেন। এরপর কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘ইতিহাস’ ছবিতে নবাগত কাজী মারুফের বিপরীতে অভিনয় করেন। সেই থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নতুন কর্মব্যস্ততা কেমন যাচ্ছে এখন? এই তো আলহামদুলিল্লাহ, সবার যেরকম যাচ্ছে আমারও সেরকম যাচ্ছে। নতুন একটি সিনেমার কাজ করেছি। সেটা হচ্ছে মোসাদ্দেক ফাল্গুন পরিচালিত ‘কিশোর গ্যাং স্টার’- এটার শুটিং শেষ হয়ে গেছে এবং অপরটি হচ্ছে রাসেল মিয়ার ‘হরতাল’। এটার শুটিং শিগগির শুরু হওয়ার কথা আছে। আর কয়েকটি পুরনো সিনেমা রিলিজের অপেক্ষায় আছে। ‘কিশোর গ্যাং স্টার’ আপনি কী ভূমিকায় আছেন? ছবিটির গল্পটি হচ্ছে একদল কিশোর আছে যাদের লিডিং দেয় এমন একজন, সম্পর্কে সে নায়িকার খালাত ভাই হয়। সেই নায়িকা কিশোরদের ভালো করার জন্য কাজ করে- গ্যাং লিডারকে ভালো করতে কাজ করে- এভাবেই গল্পটি এগিয়ে যায়। অ্যাকশন, রোমান্টিক, গ্রামবাংলা সবকিছু মিলিয়েই ছবিটি। ‘হরতাল’ সিনেমাটি রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে। সেখানে নায়কের চরিত্র প্রতিবাদী ভূমিকায় থাকে। তার প্রতিবাদী ভূমিকার পার্ট অব লাইফ হিসেবে থাকে নায়িকা। ছবিটিতে আমি আছি কেন্দ্রীয় চরিত্রের ভূমিকায়। একজনের কারণে ফিল্মে অনেকে বেকার বলেছিলেন, এটা কি প্রতিদ্বন্দ্বী নায়কের অভাবেও? কথাটা শাকিব খান সম্পর্কে বলা। সবাই জানেন, আমি কোনো কথায় রাখঢাক রাখি না। যা বলি পষ্টাপষ্টি। আমাদের নায়ক-নায়িকা যথেষ্ট আছে। কাজের সংকট থাকাতেই তাদের কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এজন্য শুধু শাকিবকেই দোষ দেব না- আপনারাও (মিডিয়া) এর জন্য দায়ী। মিডিয়া বুঝে না বুঝে শাকিবকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এ কারণে তারা ফোকাসটা শুধু শাকিবের ওপর ধরে রাখে। তখন নির্মাতারাও তার প্রতিই ঝুঁকেন। এই সুযোগে শাকিবও তার নিজের সুবিধাটি কাজে লাগান। নির্মাতারা তার মতামতেই শিল্পীদের কাস্ট করেন। আপনাদের দুর্বল রিভিউয়ুর কারণে শাকিব খানের মতো সাব স্টান্ডার্ডের অভিনেতাও বড় অভিনেতা হয়ে যাচ্ছে। তাতে শুধু শিল্পীরাই নন- অনেক ক্যামেরাম্যান, মেকআপম্যান, টেকনিশিয়ানও বেকার হতে থাকেন। এখন যেসব নতুন নতুন সিনেমা আসছে প্রেক্ষাগৃহে কেমন মনে করছেন? আসলে প্রেক্ষাগৃহ যদি না বাড়ে তাহলে যতই সিনেমা হোক তাতে তো বাণিজ্যিকভাবে লাভ হবে না। অনেক প্রোডিউসার আছেন যারা নামের জন্য সিনেমা বানাচ্ছেন, অনেকে আছেন ব্যবসা করার জন্য বানাচ্ছেন। আলোচনায় আসা এক বিষয় আর বিজনেস করা আরেক বিষয়। যতই আলোচিত সিনেমা হোক যদি ব্যবসা না করে তাতে তো যারা ব্যবসা করতে চান তারা তো এখানে অর্থ লগ্নি করবেন না। আমরা যখন সিনেমা করেছি তখন প্রোডিউসার আমাদের দিয়ে ব্যবসা করেছেন। শুরু হয়ে গেল হিন্দুস্তানি সিনেমার প্রদর্শনী- এতে আমাদের প্রেক্ষাগৃহ বাড়বে? প্রেক্ষাগৃহ সংখ্যা বাড়লেও আমাদের তো লাভ হবে না। লাভ হবে বিদেশি সিনেমাগুলোর। বাইরের ছবি যদি এখানে চলেই- আমরাও তো প্রত্যাশা করতে পারি- আমাদের সিনেমাও বাইরে চলুক। আসলে আমরা যতই বলি- ‘দেশীয় পণ্য কিনে হন ধন্য’- এটা শুধু মুখের কথা। নয়ত বাইরের ছবি প্রদর্শনীতে দেশপ্রেমটা থাকল কোথায়? আসলে আমরা যতই দেশপ্রেমের কথা বলি বাইরে গিয়ে ভারতীয় কোনটা, ইন্ডিয়ান কোনটা- এমনই দেশপ্রেম দেখাই। এই প্রদর্শনী আমার কাছে নেগেটিভই মনে হয়। এই প্রদর্শনী আমার কাছে কিছুতেই পজিটিভ মনে হয় না। এখন ফিউচারই বলে দেবে ইন্ডিয়ান সিনেমা কতটা ভালো হবে বা ভালো হবে না। এ নিয়ে আপনার-আমার বলার দরকার নেই। ইদানীং তো বেশ শুটিং হচ্ছে; তারপরেও আপনার সিনেমা কম কেন? এখন যেসব সিনেমা হচ্ছে বেশির ভাগই কম বাজেটের। সেখানে আমাদের পোষাবে না। চাইলে আমি এ রকম সিনেমা মাসে ৩০টা করতে পারি। যারা নাটক বা অডিও করতে পারছেন না তারাই এসব সিনেমা বানাচ্ছেন। আমরা যে স্টান্ডার্ডের সিনেমায় কাজ করেছি, তারা তো এ রকম সাব স্টান্ডার্ডের সিনেমায় কাজ করতে পারি না।