জিলহজ মাসের ফজিলত

প্রকাশিতঃ জুন ১৬, ২০২৩ | ৭:০০ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

হিজরি বর্ষপঞ্জির সর্বশেষ মাস জিলহজ। এ মাস চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। এটি হজের মাস, ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হওয়ার মাস, প্রভুর সান্নিধ্য লাভের মাস। পবিত্র রমজান মাসের পর গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের সময় হলো জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন। এ দিনগুলোর ইবাদত আল্লাহতায়ালার কাছে অতিপ্রিয়। জিলহজ মাসের প্রথম দশকের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা পবিত্র কুরআন মাজিদে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দশকের রাতের শপথ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘শপথ ফজরের, শপথ দশ রাতের।’ (সূরা আল-ফজর, আয়াত নং-১-২)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও মুজাহিদ (রহ.)সহ অনেক সাহাবি, তাবেয়ি ও মুফাসসির বলেন, এখানে ‘দশ রাত’ দ্বারা জিলহজ মাসের প্রথম দশ রাতকেই বুঝানো হয়েছে। (তাফসিরে ইবনে কাসির)। সুতরাং এ দশ দিনের আমল আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয়। এ দশ দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে রাসূলে কারিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘মহান আল্লাহর কাছে জিলহজ মাসের দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও এর চেয়ে উত্তম নয়? তিনি বললেন, না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে হ্যাঁ, সেই ব্যক্তির জিহাদের চেয়ে উত্তম যে নিজের জানমাল নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য বের হয়েছে। অতঃপর কোনো কিছু নিয়ে ঘরে ফিরে আসেনি।’ (সুনানে আবু দাউদ, সহিহ বুখারি, জামি তিরমিজি)। জিলহজ মাসের প্রথম দশকের উল্লেখযোগ্য কিছু আমল নিম্নে তুলে ধরা হলো- ঈদুল আজহার নামাজ জিলহজ মাসের দশম দিন ঈদুল আজহার সালাত প্রত্যেক সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন পুরুষের ওপর ওয়াজিব। যা ঈদগাহে গিয়ে আদায় করতে হয়। হজরত আবু সাঈদ (রা.) বলেন, ‘নবি কারিম (সা.) ঈদুল ফিতর এবং আজহাতে ঈদগাহে যেতেন।’ (সহিহ বুখারি)। কুরবানি করা এ দিনগুলোর দশম দিন ঈদের সালাতের পর সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য কুরবানি করা ওয়াজিব। আল্লাহতায়ালা তার নবিকে কুরবানি করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় কর ও কুরবানি কর।’ (সূরা আল-কাউসার-২)। তাকবিরে তাশরিক জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজরের নামাজ থেকে ১৩ তারিখের আসর নামাজ পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক পড়া ওয়াজিব। এটি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর সব বালেগ পুরুষ, মহিলা, মুকিম, মুসাফির, গ্রামবাসী, শহরবাসী, জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়কারী বা একাকী আদায়কারী প্রত্যেকের ওপর একবার করে তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা কর্তব্য। (ফাতাওয়ায়ে শামি, বাহরুর রায়েক)। পুরুষের জন্য তাকবিরে তাশরিক জোরে পড়া ওয়াজিব। আস্তে পড়লে তাকবির পড়ার হক আদায় হবে না। আর মহিলারা নিচু আওয়াজে অর্থাৎ নিজে শুনতে পায় এমন আওয়াজে পড়বে। (রদ্দুল মুহতার, এলাউস সুনান)। তাকবিরে তাশরিক হলো-আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহ আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ। আরাফার দিনে রোজা রাখা আল্লাহর রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আরাফার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি মনে করি, তার বিনিময়ে আল্লাহতায়ালা এক বছর আগের ও এক বছর পরের গুনাহগুলো মাফ করে দেবেন।’ (সহিহ মুসলিম)।