মুদি দোকানদার থেকে বাবু ইউপি চেয়ারম্যান

প্রকাশিতঃ জুন ১৯, ২০২৩ | ৬:২৫ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবু তার চাচাতো ভাই পুলিশ কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় অল্প সময়ে কোটিপতি বনে গেছেন। গ্রামের মুদি দোকানদার থেকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান হয়েছেন। সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও তিনি বনে যান। জানা গেছে, এক যুগ আগে বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউনিয়নের কামালের বার্ত্তি বাজারে বাবু মুদি দোকান চালাতেন। অগ্নিকাণ্ডে দোকানটি পুড়ে গেলে পুলিশ কর্মকর্তা চাচাতো ভাইয়ের সহযোগিতায় তিনি বিভিন্ন মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ার নির্মাণকাজে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ছাত্রজীবনে জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র সমাজ করলেও পরে তিনি বিএনপিতে ভেড়েন। ২০১১ সালে আওয়ামী লীগে ভিড়ে তিনি সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেন। ওই নির্বাচনে তিনি পরাজিত হলেও ২০১৪ সালে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন। আওয়ামী লীগের টিকিটে ২০১৬ সাল ও ২০২২ সালে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দ্বিতীয়বার চেয়ারম্যান হওয়ার পর বাবু আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ক্যাডার ও মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে তিনি চলতেন। পুলিশ কর্মকর্তার ভাই হওয়ায় থানার অনেকে বাবুকে সমীহ করতেন। বাবুর দাপটে থানা পুলিশ তার কথায় ওঠবস করত। এ সুযোগে তিনি অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান। তদবির ও নিয়োগ বাণিজ্য, থানায় দালালি ও বিচার সালিশের নামে ইউপি চেয়ারম্যান বাবু দুই হাতে টাকা কামিয়েছেন। বকশীগঞ্জ পৌর শহরের ব্র্যাক রোডে তিনি ১০ শতক জমির ওপর বাড়ি, কামালের বার্ত্তি বাজারে চারতলা ভবন ও বেশ কয়েকটি দোকান করেছেন। গাজীপুরের সাইনবোর্ড এলাকায়ও তার বাড়ি রয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, ঢাকায়ও তার নামে জমি ও ফ্ল্যাট আছে। এদিকে বাবুর দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের বলেন, ২০১০ সালে বাবু তাকে বিয়ে করে ময়মনসিংহে রাখেন। তবে কখনো বিয়ের কাবিননামা তাকে দেখাত না বাবু। ২০১৮ সালে কাবিননামা দেওয়া হয়। এরপর কয়েক মাস পর জাল তথ্য উপস্থাপন করে বাবু তাকে তালাকনামা পাঠায়। আদালতে সাবিনা দুটি মামলা করেন। এরপর সাবিনাকে নিয়ে সংসার করতে আদালতে বাবু জানালে আবার তারা সংসার শুরু করেন। সাবিনা আরও জানান, ২০২২ সালের নভেম্বরে তাদের মেয়ে হয়। মে মাসে সন্তানসহ গ্রামের বাড়িতে হাজির হলে তাকে মারধর করা হয়। ‘৯৯৯’ ফোন করলে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। পুলিশ কর্মকর্তা ভাইয়ের ক্ষমতা অপব্যবহার করে বাবু এসব অপকর্ম করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলারও সাহস পেত না।