সোশ্যাল মিডিয়ায় যে কোনো ধরনের ‘প্রচার চালানোর’ ক্ষেত্রে ডাক্তারদের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এক নবজাতক ও তার মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় রোববার হাসপাতালের পরিচালক ডা. এমএবি সিদ্দিকের সই করা এক নোটিসে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নোটিসে বলা হয়, ‘হাসপাতালের সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিজেদের প্র্যাকটিস বাড়ানোর জন্য ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামসহ যে কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস পোস্ট করে রোগী বা অভিভাবকদের আকর্ষণ করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করা হলো।’ কোনো চিকিৎসক বা তার নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি এ ধরনের কার্যকলাপ করলে ওই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে নোটিসে। প্রসঙ্গত, গর্ভে সন্তান আসার পর থেকে সেন্ট্রাল হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহার কাছেই নিয়মিত চিকিৎসা নিয়েছেন কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মাহবুবা রহমান আঁখি। অস্ত্রোপচার ছাড়া সন্তান জন্ম দিতে ফেসবুক ঘেঁটে ওই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন আঁখি ও তার স্বামী। প্রসবব্যথা উঠলে গত ৯ জুন মধ্যরাতে কুমিল্লা থেকে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতাল আনা হয় আঁখিকে। পরিবারের ভাষ্য, সেদিন তাদের বলা হয়েছিল ডা. সংযুক্তা হাসপাতালে আছেন। কিন্তু সেদিন ওই চিকিৎসকের সহকারীরা প্রথমে স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করেন। জটিলতা তৈরি হলে অস্ত্রোপচার করা হয়। সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুটি ওইদিনই মারা যায়। সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আঁখিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দুপুরে মারা যান আঁখি। এ ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে বুধবার ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেছেন আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী। মামলায় ডা. সংযুক্তা সাহার দুই সহযোগী ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ওই দুই চিকিৎসক-কর্মচারীসহ ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আইসিইউ ও জরুরি সেবার মান সন্তোষজনক না হওয়ায় রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম শুক্রবার বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এছাড়া ডা. সংযুক্তা সাহা ওই হাসপাতালে আপাতত কোনো বিশেষজ্ঞ সেবা দিতে পারবেন না।