ইউরোপের যাবার পথে প্রায় গ্রিসের উপকূলে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে শত শত অধিবাসীর মৃত্যু হয়। কতজন যে সাগরের পানিতে তলিয়ে যায় তার হিসাব কারো কাছে নেই। তবে মাঝে মধ্যে নৌকা ডুবির ঘটনায় লাশ উদ্ধার করা হয়। তারপর জানা যায়, কোন দেশের কতজন মারা গেছেন। এই প্রক্রিয়ায় প্রায় আফ্রিকা ও এশিয়ার নাগরিকদের লাশ পাওয়া যায়। এবার এক নৌকাতেই পাকিস্তানের প্রায় ৩০০ যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় সে দেশে তোলপাড় চলছে। জানা যায়, সম্প্রতি গ্রিসের কাছে অভিবাসী বহনকারী একটি নৌকা ডুবে কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৩০০ পাকিস্তানি ছিল বলে রোববার তাদের আত্মীয়স্বজন এবং পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে, গ্রিসের উপকূলে ডুবে যাওয়া একটি মাছ ধরা ট্রলারে নারী ও শিশুসহ ৭৫০ জন ছিল। পূর্ব লিবিয়া থেকে ইতালির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার পাঁচ দিন পর গত বুধবার ভূমধ্যসাগরে গ্রিক উপকূলে এটি ডুবে যায়। দুর্ঘটনায় পাকিস্তানের শুধু ১২ জন নাগরিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে। তারা বলেছে, নিহতদের মধ্যে পাকিস্তানিদের সংখ্যা এবং পরিচয় যাচাই করে দেখা হচ্ছে। রোববার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলো নিহতদের কান্নারত আত্মীয়দের সাক্ষাৎকার প্রচার করে এবং জাহাজডুবির ঘটনায় অন্তত ২৯৮ জন পাকিস্তানি নিহত হওয়ার খবর জানায়। তবে কর্মকর্তারা নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের কার্যালয় জানিয়েছে, নিহতদের স্মরণে সোমবার দেশটি জাতীয় শোক দিবস পালন করবে। তবে হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে আর কোনও বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি। শরিফ মানব পাচারের সাথে জড়িত এজেন্টদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ দিয়েছেন, ফেডারেল কর্তৃপক্ষ রোববার জাহাজডুবির সাথে জড়িত ১০ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার খবর দিয়েছে। ঘনঘন দুর্ঘটনা এবং মাঝে মাঝে সীমান্তরক্ষীদের মারাত্মক গুলি চালনা সত্ত্বেও, দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারের হাজার হাজার তরুণ পাকিস্তানি মানব পাচারকারীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করে একটি উন্নত জীবনের সন্ধানে অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করার জন্য বিপজ্জ্বনক যাত্রা করে।