সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের সামনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। বিগত নির্বাচনগুলোতে এই দুই সিটিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে লড়েছেন বিএনপির প্রার্থীরা। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তারা নেই। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর ওপর হামলার জেরে সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচন থেকে সরে গেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা। বলতে গেলে, বড় কোনো অঘটন না ঘটলে রাজশাহীতে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সিলেটে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আজ অনেকটাই ফাঁকা মাঠে গোল দিতে যাচ্ছেন। এদিন দুই সিটিতে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। মেয়র পদে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় দুই সিটিতেই ভোট নিয়ে মানুষের আগ্রহও কম। যদিও এ নিয়ে চিন্তিত নয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সব দলকে ভোটে আনতে কোনো উদ্যোগও নেয়নি ইসি। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের দিকে নজর ইসির। সরেজমিন পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে। স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, মেয়র পদে সিলেট সিটিতে ৮ ও রাজশাহীতে ৪ প্রার্থী রয়েছেন। সরকারি দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের মতে, নির্বাচনি প্রচার ও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আলোচনা জাগিয়ে রেখেছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডে ২৭২ জন ও ১৪টি সংরিক্ষত ওয়ার্ডে ৮৭ জন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ সিটির ২৫টি সাধারণ ও ২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বিএনপির ৪২ নেতাকর্মী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচন করায় তাদের বহিষ্কার করেছে বিএনপি। অপরদিকে জামায়াতের ১৫ নেতাও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। একইভাবে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২৯ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১১ জন ও ১০টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৪৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। এ সিটিতে বিএনপির বহিষ্কৃত ১৬ জন ও জামায়াতের ৯ জন কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দুই সিটিতেই কেন্দ্রে ভোটার টানতে এখন কাউন্সিলর প্রার্থীরাই একমাত্র ভরসা। কাউন্সিলর পদে বিপুল প্রার্থী থাকায় তারাই ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন বলেও মনে করেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম। সোমবার তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সাধারণ ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরাই ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। আমার জানা মতে, সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডে একটি দলের (বিএনপি) কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। এক ওয়ার্ডে ১৯ জন, অন্য ওয়ার্ডে ১৭ জন, ১৩ জন, ১১ জন পর্যন্ত কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। তারাই ভোটার নিয়ে আসবেন। তবে দুই সিটিতে বৃষ্টির প্রবণতা রয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নির্বাচনে কোন দল এলো বা না এলো সেটা নির্বাচন কমিশনের দেখার বিষয় নয়। নির্বাচন আইনানুগ হয়েছে কিনা-সেটা দেখার বিষয়। দুই সিটিতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সিলেট ও রাজশাহীর স্থানীয় রাজনীতিকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে-গাজীপুর, খুলনা ও বরিশালের মতো এ দুই সিটিতে ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই মেরুতে রয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটার আগ্রহ নেই-এমনটি প্রমাণ করতে চায় বিএনপি। যদিও দলটির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সিলেটে ৪২ জন ও রাজশাহীতে ১৬ জন কাউন্সিলর পদে রয়েছেন। দুই সিটিতে দলীয় নেতাকর্মীরা যাতে ভোটকেন্দ্রে না যান সেই বার্তাও দিয়েছে দলটি। অপরদিকে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট হয় এবং সেই ভোটে ভোটারদের আগ্রহ আছে-তা প্রমাণ করছে ক্ষমতাসীন দল। এর কৌশল হিসাবে কাউন্সিলর পদে কাউকে মনোনয়ন না দিয়ে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এতে প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। অপরদিকে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন তাদের প্রচারণায় কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন, কাউন্সিলর প্রার্থীরাই তাদের জয়ের স্বার্থে ভোটারদের নিজ উদ্যোগেই কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন। এর আগে ২৫ মে অনুষ্ঠিত গাজীপুরে ৪৮.৭৬ শতাংশ এবং ১২ জুন অনুষ্ঠিত খুলনায় ৪৮.১৭ শতাংশ ও বরিশালে ৫১.৪৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনে আজ ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বড় আকারের ভোট শেষ হচ্ছে। এ দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে ইসির পক্ষ থেকে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দুই সিটির নির্বাচনে সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ঢাকায় ‘নির্বাচন ভবন’ থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সরাসরি ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনাররা। ভোট নেওয়া হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। থেমে থেমে বৃষ্টির মধ্যে মঙ্গলবারই কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনি সরঞ্জাম পৌঁছানো হয়েছে। নির্বাচনের নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব, আনসার ও বিজিবি সদস্য মাঠে রয়েছেন। এছাড়া দুই সিটিতে আচরণবিধি দেখভালে জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও রয়েছেন। ২৬ এপ্রিল সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ২ থেকে ১৯ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত ১৮ দিন প্রচারণ চালিয়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। সিলেটে মূল আলোচনায় কাউন্সিলর প্রার্থীরা : ইসির তথ্য অনুযায়ী, সিলেটে ৮ জন মেয়র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যদিও এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়-এমন অভিযোগ দেখিয়ে প্রচারের মাঝপথে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। নির্দিষ্ট সময়ের পর নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় ব্যালটে তার নাম রয়েছে। মাঠে থাকা বাকি সাত মেয়র প্রার্থী হলেন- আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙ্গল), জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহ জাহান মিয়া (বাস), মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট) ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ)। নির্বাচনে সাতজন মেয়র প্রার্থী থাকলেও ভোটের মাঠে মূল আলোচনায় রয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে ২৭২ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৮৭ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বেশিরভাগ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। এর বাইরে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ৪২ জন ও জামায়াতের ১৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে ১৯ জন কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৩৩ ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ১৭ জন করে প্রার্থী রয়েছেন। এছাড়া নির্বাচনের প্রচারে পুরো সময়জুড়ে পালটাপালটি বক্তব্যে সরব ছিলেন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী। ভোটের আগের দিন মঙ্গলবারও এর ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। আজ অনুষ্ঠেয় ভোট সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে আশা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। অপরদিকে এজেন্ট ও নেতাকর্মীদের ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। মঙ্গলবার তারা দুজনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার দুপুরে নিজ বাসায় নজরুল ইসলাম বাবুল অভিযোগ করেন, তার এজেন্টদের বাসায় গিয়ে ও মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের অসংখ্য বহিরাগত নেতাকর্মী ভোটের দিন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতে সিলেটে অবস্থান করছে। ইভিএমকে চুরির মেশিন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। জাতীয় পার্টির প্রার্থীর অভিযোগ সত্য নয় বলেও দাবি করেন তিনি। এক নজরে সিলেট সিটি নির্বাচন : এ সিটি করপোরেশনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, মহিলা ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন ও হিজড়া ভোটার ৬ জন। সিসিক নির্বাচনে ১৯০টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৬৭টি ভোটকক্ষে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। এ নির্বাচনে ১৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। বাকি ৫৮টি কেন্দ্র সাধারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ও ঝুঁকিমুক্ত কেন্দ্রকে ‘সাধারণ’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান জানান, ১৯ জুন রাত ১২টার পর থেকে সিসিকের ৪২টি ওয়ার্ডে জেলা প্রশাসনের ৪২টি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের টিম মাঠে থাকবে। এর বাইরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ১০টি টিম থাকবে। প্রতিটি টিমের সঙ্গে ১ প্লাটুন বিজিবি থাকবে। সোমবার থেকে আগামীকাল পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবেন বলে জানান তিনি। সিসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের জানান, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণের জন্য তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ সব মহলের সহযোগিতা কামনা করেন। একই চিত্র রাজশাহীতেও : রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে অনেকটা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চলেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী নেই। শুরুতে থাকলেও ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মুরশিদ আলমও ভোট বয়কট করেছেন। জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন ও জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার মাঠে থাকলেও খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম। তবে কাউন্সিলর পদে প্রতিটি ওয়ার্ডেই শক্ত লড়াই হবে। অনেক ওয়ার্ডেই আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী আছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও দলীয় সিদ্ধান্ত ভেঙে তাদের ১৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। আবার জামায়াতের প্রার্থী আছেন ৯ জন। ৩০ ওয়ার্ডের মধ্যে একটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পর বাকি ২৯ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১১ জন মাঠে আছেন। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন ৪৬ জন। ফলে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো ও ভোটকে উৎসবমুখর করতে মূল ভূমিকা রাখবেন মূলত এসব কাউন্সিলর প্রার্থীরাই। রাসিক নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীরা একদিকে যেমন ভোটকে উৎসবমুখর করছেন অন্যদিকে ভোটে সংঘাতের শঙ্কাও তাদের নিয়েই। প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। পাড়া-মহল্লায় দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের ঘটনাও ঘটেছে। ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডের ১৯টিতে কাউন্সিলর পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় এই উত্তাপ আরও বেড়েছে। এর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরাও মাঠে রয়েছেন। নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৫৫টি। এরমধ্যে ১৪৮টিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে-এসব কেন্দ্র চিহ্নিত করে বাড়তি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। এবারের নির্বাচনে ভোটার তিন লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ এবং নারী এক লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন এবং ট্রান্সজেন্ডার ভোটার আছেন ৬ জন। নতুন ৩০ হাজার ১৫৭ জন ভোটার এবার প্রথমবারের মতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তবে গত তিন নির্বাচনে প্রায় ৮০ শতাংশ বা তার বেশি ভোট পড়লেও এবার মেয়র পদে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার নির্দেশনা ছিল। একই সঙ্গে ইভিএম এ ভোটের ধীর গতিসহ নানা সমস্যার অভিযোগ আছে। এর সঙ্গে বৃষ্টির বাগড়া যুক্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এদিকে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শুরু থেকেই ক্ষমতাসীন শিবিরে চিন্তা ও অস্বস্তি ছিল। ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে নানা উদ্যোগও ছিল তাদের।