উদীয়মান অর্থনীতির পাঁচ দেশ ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার জোট ব্রিকসে বাংলাদেশ এখনো যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আবেদন করেনি। যদি ব্রিকস আমন্ত্রণ জানায় তবে বাংলাদেশ এতে যোগ দেবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ব্রিকসে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা বাংলাদেশের রয়েছে। একক কোনো দেশে কিংবা সংস্থার ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এমন সিদ্ধান্ত। তিনি এ বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলেননি। উদীয়মান অর্থনীতির পাঁচ দেশ— ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে ব্রিকস গঠিত। এটি প্রধানত একটি অর্থনৈতিক সহযোগিতার জোট। ২০০১ সালে এই জোটের ধারণা নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়। ২০০৯ সালে জোটের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক গতি পাওয়ার সময় সদস্য ছিল চার দেশ। পরে এতে যোগ দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এদিকে নতুন সদস্যদের এই জোটে স্বাগত জানাতে চীন প্রস্তুত রয়েছে বলে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং জানিয়েছেন। মঙ্গলবার এ জোটে বাংলাদেশের যোগদান প্রসঙ্গে আরআইএ নভোস্তির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বেইজিংয়ের এ অবস্থানের কথা জানান। বেইজিংয়ে সংবাদ সম্মেলনে মাও নিং বলেন, উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফরম হিসাবে ব্রিকস বহুপাক্ষিক অবস্থান সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই জোট বিশ্বজুড়ে শাসন ব্যবস্থার সংস্কার জোরালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি করছে। তিনি বলেন, ব্রিকসের সম্প্রসারণ একটি রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রক্রিয়া। পাঁচ সদস্য রাষ্ট্রই এই ঐকমত্যে পৌঁছেছে। ব্রিকসের সম্প্র্রসারণ এগিয়ে নেওয়ার জন্য চীন প্রতিশ্রুতিশীল রয়েছে। ব্রিকসের বড় পরিবারে আরও সমমনা অংশীদার আনতে প্রস্তুত রয়েছে চীন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সম্প্রতি জেনেভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্রিকসের সদস্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট মাতামেলা সাইরিল রামাপোসার মধ্যে বৈঠকের পর জোটটিতে বাংলাদেশের যোগ দেওয়া নিয়ে আলোচনা জোরালো হয়। জানা গেছে, আগামী আগস্টে ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলন হবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেখানে নতুন সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। সৌদি আরব, আর্জেন্টিনা, আলজেরিয়া, বাহরাইন, মিসর, ইন্দোনেশিয়া ও ইরান ব্রিকসের সদস্যপদ পেতে ইতোমধ্যে আবেদন করেছে।