রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা। আসতে শুরু করেছে ফলাফল। রাজশাহী সিটিতে বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ৭৬ কেন্দ্রে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। নৌকা প্রতীকে এই প্রার্থী ৭৬ কেন্দ্রে পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৫০৩ ভোট। এসব কেন্দ্রে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৭৪ ভোট। সিলেট সিটিতে প্রাপ্ত ১১০ কেন্দ্রে ৬৬ হাজার ২৫৬ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এসব কেন্দ্রে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ২৫ হাজার ৯৫০ ভোট। বুধবার সকাল ৮টায় দুই সিটিতে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট দেন ভোটাররা। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সরাসরি ভোটগ্রহণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ইসি। তাদের চোখে অনিয়ম বলতে কেবল রাজশাহীর একটি কেন্দ্রেই ঘটেছে। সেখানে ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে একাধিকবার প্রবেশ করতে দেখা যায় এক নারীকে। সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে তাকে তিন দিনের জন্য জেলে পাঠানো হয়েছে। রাজশাহীতে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী চারজন। এর মধ্যে অন্যতম হলেন আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন। সকাল সোয়া ৯টার দিকে নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ডের উপশহর এলাকার রাজশাহী স্যাটেলাইট টাউন হাই স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন লিটন। ভোট দিয়ে বের হয়ে তিনি বলেছেন, ভোটে না এসে বিএনপি ভুল করেছে। নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে তারা ধারণা করতে পারত। এই সিটিতে জামায়াত ও বিএনপির ভোটার আছে। উন্নয়নের স্বার্থে তারাও নৌকায় ভোট দেবে। রাজশাহীতে প্রথম ২ ঘণ্টার ভোটগ্রহণের গতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাইফুল ইসলাম স্বপন। নগরীর ১৬ নং ওয়ার্ডের মালদহ কলোনি এলাকায় আটকোর্ষী স্কুল কেন্দ্রে দুপুর ১টার দিকে ভোট দেন তিনি। পরে তিনি বলেছেন, প্রতি ঘণ্টায় ১৮ জনের বেশি ভোট দিতে পারেনি। নির্বাচন কমিশনে আস্থা ছিল জাকের পার্টির মেয়রপ্রার্থী লতিফ আনোয়ারের। দুপুর ১২টায় নগরীর মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে নিজের ভোট দেন তিনি। নির্বাচন কমিশনকে বিশ্বাস করে কোনো কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট দেননি তিনি। তিনি বলেছেন, তাদের দলের প্রথম কথা হলো বিশ্বাস ও ভালোবাসা। তারা নির্বাচন কমিশনকে বিশ্বাস করতে চায়। এ কারণে পোলিং এজেন্ট দেওয়া হয়নি। নিরুত্তাপ ভোটে দুপুর গড়াতে বাগড়া দেন কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম বাবু ও রুহুল আমিন টুনুর সমর্থকরা। নগরীর ৪ নং ওয়ার্ডের কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুর ১২টার দিকে এই দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তবে পরিস্থিতি শান্ত করতে বেশি সময় নেয়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অন্যদিকে ‘বিএনপিবিহীন’ ভোটে এবার সিলেটে আওয়ামী লীগের হয়ে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির (জাপা) নজরুল ইসলাম। নগরীর পাঠানটুলা শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে সকাল সোয়া ৮টায় ভোট দেন আনোয়ারুজ্জামান। পরে তিনি বলেছেন, নগরবাসী উৎসবের আমেজে ভোট দিয়েছেন। ইভিএমে সহজেই ভোট দিয়েছেন তারা। ফল যাই হোক তিনি মেনে নেবেন। সকাল সাড়ে ৯টায় নগরীর আনন্দ নিকেতন কেন্দ্রে ভোট দেন জাপা প্রার্থী নজরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, অনেক কেন্দ্রে ভোটার ও এজেন্ট ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বিশাল ব্যবধানে জয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।