ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারের ‘ভুলের আক্কেল সেলামী , বয়স্কভাতা পুনরায় চালু

প্রকাশিতঃ জুন ২২, ২০২৩ | ৭:১৬ পূর্বাহ্ন
একে আজাদ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধ

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে জেলেখা বেগম নামে এক বয়স্ক বৃদ্ধাকে জীবিত থাকা সত্ত্বেও তার ‘মৃত্যুসনদ’ জারি করে বয়স্কভাতা বন্ধ করে দেয়ায় ‘ভুল’ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদস্য (মেম্বার)। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জানিয়েছেন, জেলেখার ভাতা পুনরায় চালু করে দেয়া হয়েছে। উপজেলার ৮নং নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ড সন্ধ্যারই গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী জেলেখা বেগম প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে বয়স্কভাতা পাচ্ছিলেন। হঠাৎ তার ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি জানতে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে যান তিনি। সেখানে তাকে বলা হয়, তিনি ‘মারা গেছেন’ জেনে তার ভাতা বন্ধ করে অন্য একজনকে দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে গত ২৬ মে ২০২৩ ইং তারিখে এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা খবরও প্রকাশ হয়। জানা যায়, এই পরিস্থিতির জন্য বৃদ্ধা জেলেখার কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন নন্দুয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারী ও ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার বাদশা। পাশাপাশি তারা ইউএনও বরাবরও লিখিতভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন। এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছিল এবং উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করছিল। তদন্তে প্রমাণিত হয় যে, বয়স্কভাতা সেবাগ্রহীতা একজন জীবিত বৃদ্ধা নারীর মৃত্যুসনদ জারি হয়েছে। যার কারণে ভাতাবঞ্চিত হন ওই বৃদ্ধা। তদন্তের শুনানি শেষে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার উভয়ে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন।’ ইউএনও আরও বলেন, ‘তারা লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন- ভুলবশত ওই জীবিত বৃদ্ধার মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্র জারি হয়েছে। আর কখনো যাচাই-বাছাই না করে কোনো কাগজে তারা স্বাক্ষর করবেন না এবং পরে এ ধরনের ভুল আর হবে না। যদি হয় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলেছেন তারা।’ ওই বৃদ্ধার বয়স্কভাতা আবার চালু করে দেয়া হয়েছে জানিয়ে ইউএনও সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, ‘যে সময় তিনি ভাতাবঞ্চিত ছিলেন সে সময়ের ক্ষতিপূরণও তাকে দেয়া হয়েছে।’ এদিকে জেলেখা বেগম তার বাতিল হওয়া বয়স্ক ভাতার কার্ড পুনরায় বহাল হওয়ায় ও বঞ্চিত টাকা ফিরে পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, আমি সরকারের দোয়া বয়স্ক ভাতার টাকা আমার মোবাইলে আগের মত আবার টাকা তুললাম। আমার আর কোন অভিযোগ নাই,আমি উপজেলা প্রশাসন ও সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের সহযোগিতায় আমি আমার বাতিল হওয়া বয়স্ক ভাতার কার্ড ফিরে পেয়েছি।