এক যে ছিল কাঁচামরিচ

প্রকাশিতঃ জুলাই ১২, ২০২৩ | ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ
সাহিত্য ডেক্স

এক যে ছিল কাঁচামরিচ, তার ছিল খুব ঝাল, মুখে নিলেই রেগে যেত, পুড়িয়ে দিত গাল। চোখের পানি ছুটত চোখে, নাকের পানি নাকে, সবাই তবু সকাল বিকাল কামড়ে দিত তাকে। ডলত তাকে, পিষত তাকে, থেঁতো করে খেত, রাস্তাঘাটের সস্তাদরের কাঁচামরিচ সে তো। রাঁধুনিরা কাটত তাকে কুচি কুচি করে, ছেঁচত তাকে পেষল দিয়ে, ছিঁড়ত হাতে ধরে। পেটটা চিরে তেলে ভেজে ডালে দিত বাগাড়, তাতেই বুঝি শেষ হতো সব?-আরও আছে মাগার- দুই টাকার ওই শাকের সঙ্গে তাকেও দিত ভেজে, আলুর সঙ্গে, কচুর সঙ্গে ভর্তা হতো সে যে। বুড়ি দাদির রসিকতায় মরিচ হতো নাচার, তাকে দিয়েই বানাত সে মিষ্টি-মধুর আচার। তাই অনাদর অবহেলায় কাটছিল তার দিন, পেট টিপে তার বের করত কত্ত ভিটামিন। এত কিছুর পরেও মানুষ খোঁটা দিত ওকে, ঝাল না হওয়ার ঝাল মিটাত আচ্ছামতো বকে- বাচ্চা মরিচ!-ঝাল লাগে না, ঘাসের মতো লাগে, পাতের থেকে মরিচ তুলে ফেলে দিত রাগে। নেই মরিচের সেই দশা আজ-ধনী এখন সে খুব, রাতারাতি সবাইকে সে বানিয়েছে বেকুব। কুড়ি টাকার মরিচ এখন ছয়শ টাকা কেজি, নেই এদেশের হাট বাজারে তার মতো কেউ তেজি। দাঁত দিয়ে তাই আয়েশ করে চাবায় না কেউ তাকে, বরং সবাই ঠোঁট বাড়িয়ে চুমু দিয়ে রাখে। কচুর সঙ্গে ভর্তা হওয়ার সেদিন গেছে চলে, কেউ পারে না খেতে তাকে পানতা ভাতে ডলে। কাঁচামরিচ নিজেই এখন দিয়ে বেড়ায় ডলা- কোথায় গেল পাটাপুতা? কোথায় কচু কলা? রাঁধুনিরা! আয় কোমরে শাড়ির আঁচল এঁটে, পারিস যদি দেখা আমার একটুখানি বেটে।