স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ী সম্মেলন আজ

প্রকাশিতঃ জুলাই ১৫, ২০২৩ | ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

সারা দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত সম্মেলন আজ। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিকালে আয়োজিত এই সম্মেলনে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বেসরকারি খাতের অবদান, বর্তমান প্রেক্ষাপট ও করণীয় নিয়ে আলোচনা হবে। শুক্রবার এফবিসিসিআই ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংগঠনটির নেতারা। এ সময় এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সম্মেলনে বিদেশি বিনিয়োগকারী, শীর্ষ করপোরেট, খাতভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশন, লোকাল চেম্বার থেকে শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নেবেন। দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নয়নে তারা তাদের চাহিদার কথা প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি বলার সুযোগ পাবেন। এর মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের একযোগে কাজ করার সঠিক গাইডলাইন পাওয়া যাবে।’ সম্মেলনে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বেসরকারি খাত কী ভূমিকা রাখবে, সেসব বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে বলে জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, ‘কিছু দিন আগে আমরা যে বড় পরিসরে আন্তর্জাতিক বিজনেস সামিট করেছিলাম সেখানকার আলোচনা, পরামর্শ, সিদ্ধান্ত, সামিটের প্রাপ্তির বিষয়গুলো একটি বই আকারে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। পরে এই বই সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’ এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘আমরা ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে যেতে চাই, সেখানে যেসব সম্ভাবনা আছে, বাধা আছে সে বিষয়গুলো এই রিপোর্টে সংযুক্ত থাকবে। সেই সঙ্গে সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা তাদের অভিমত, সুবিধা, অসুবিধার বিষয়গুলো তুলে ধরবেন।’ ব্যবসায়ী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, সালাউদ্দিন আলমগীর, হাবীব উল্লাহ ডন, এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব উর রহমান ও এফবিসিসিআইর পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জসিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো না থাকলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, ব্যবসাবাণিজ্য কোনোটাই ঠিক থাকে না। আমরা ব্যবসা করি, আমরা চাই দেশের স্টাবিলিটি, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন ভালো থাকে। কারণ এগুলো ভালো না থাকলে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১০ বছর আগের অর্থনীতি আর আজকের অর্থনীতি এক বিশাল পার্থক্য। আমরা আগের জিনিস এখন সহ্য করতে পারব না। আগে যেমন হরতাল ছিল এখন কি আমাদের অর্থনীতি হরতাল সহ্য করতে পারবে?’ তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা চায় দেশ শান্তিপূর্ণভাবে চলুক, দেশে শান্তি বজায় থাকুক। এটা আমাদের অর্থনীতির জন্য ভালো আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য ভালো।’ অতীতে রাজনৈতিক সংকট মোকাবেলায় এফবিসিসিআই মধ্যস্থতা নিয়েছিল। এখনো নেওয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এফবিসিসিআইর বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ শেষ হবে আগস্ট মাসে। সুতরাং পরে যারা নেতৃত্বে আসবেন যদি ওই ধরনের পরিস্থিতি হয় নিশ্চয়ই তারা চিন্তা করবেন। কারণ আমরা চাই বাংলাদেশের স্টাবিলিটি, বাংলাদেশের অর্থনীতি কোনোভাবেই যেন বিঘ্নিত না হয়। রাজনীতিবিদরা নিশ্চয়ই জানেন, তারাও বোঝেন দেশের অর্থনীতি না থাকলে শান্তিশৃঙ্খলা এমনিতেই থাকবে না। সুতরাং আমি মনে করি, ব্যবসায়ীরা অতীতে যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ বিনির্মাণে, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবেন।’ রপ্তানি টার্গেট অর্জনে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ প্রয়োজন : আরেক প্রশ্নের জবাবে জসিম উদ্দিন বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে রপ্তানির আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৭২ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে সরকার। এ টার্গেট অর্জনে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ প্রয়োজন। যদি জ্বালানি, গ্যাস, বিদ্যুতের সাপ্লাই নিরবচ্ছিন্ন পাওয়া যায় এটা অর্জন করা কোনো ব্যাপারই না।’ তিনি বলেন, ‘জ্বালানিতে খরচ সেইভ করতে হলে আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পেট্রোবাংলাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন বাড়ানো দরকার। আমাদের কয়লা মজুত আছে, কিন্তু উত্তলন করছি না। কয়লা উত্তোল বাড়ানো দরকার। আমাদের রিনিউঅ্যাবল এনার্জিতে আরও জোর দেওয়া দরকার।’ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর চেয়ে দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতায় পিছিয়ে আছি। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে যেন আমরা বেনিফিট নিতে পারি সে জায়গায় কাজ করতে হবে। একাডেমি ও ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে লিংকেজ করতে হবে। এ বিষয় সরকারের সঙ্গে ক্লোজলি কাজ করতে হবে। ব্যবসায়ী সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা বিষয়গুলো তুলে ধরব। শুনব তার সরকার কিভাবে আমাদের সহায়তা করতে পারে।’