‘তরুণ প্রজন্ম দেব ভোট, রাজপথে বিজয় হোক’ স্লোগানে শনিবার রাজধানীতে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ করবে জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেলা ২টায় শুরু হবে এ সমাবেশ। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশে বড় শোডাউনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সংগঠন তিনটি। ঢাকা, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর সাংগঠনিক বিভাগের সমন্বয়ে শনিবারের সমাবেশ হবে। এতে রাজধানী ও আশপাশের জেলা থেকে তিন সংগঠনের সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মীকে অংশ নিতে বলা হয়েছে। জানা যায়, সমাবেশে চাকরিবঞ্চিত, গুম হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্য, ভোট না দিতে না পারা তরুণ-তরুণীসহ এই সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত কয়েকজনের বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। সমাবেশ থেকে বিএনপি মহাসচিব চূড়ান্ত আন্দোলনের বার্তা দেবেন। তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সমাবেশের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। এতে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা তরুণদের নগরীতে পরিণত হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের কারণে চার কোটি ৭০ লাখের বেশি নতুন ভোটার তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাদের অধিকারের জন্য আমরা মাঠে নেমেছি। সেসব মেধাবী তরুণের পক্ষে মাঠে নেমেছি, যাদের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও শুধু দলীয় বিবেচনায়, আওয়ামী লীগ না করার কারণে চাকরির ভেরিফিকেশনে বাদ দেওয়া হচ্ছে। ভোট দিতে পারে না, চাকরির ক্ষেত্রে যেসব তরুণের মেধার মূল্যায়ন হচ্ছে না- এমন তরুণদের সবাই সমাবেশে অংশ নেবে। যুবদলের সভাপতি বলেন, ‘এভাবে যদি একটি দেশ চলে, প্রশাসন মেধাহীনদের দিয়ে সাজানো হয়, তাহলে একসময় এই প্রশাসন ভেঙে পড়বে। এই তরুণদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা আন্দোলনে নেমেছি।’ তিনি বলেন, ‘তরুণ সমাজ প্রস্তুত, জনগণের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তারা জালিম সরকারের কাছ থেকে মুক্তি চায়। এখন আর কোনো প্রতিবাদ নয়, সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’ নতুন কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে সুলতান সালাউদ্দিন বলেন, ‘তারুণ্যের সমাবেশের কর্মসূচি শেষে আমরা আবার বসব। তখন নতুন কর্মসূচি ঠিক করব। সংবাদ সম্মেলন করে তা সবাইকে জানাব।’ ইতোমধ্যে পাঁচটি তারুণ্যের সমাবেশ হয়েছে জানিয়ে যুবদলের সভাপতি বলেন, ‘এসব সমাবেশের মাধ্যমে তরুণ সমাজ উজ্জীবিত হচ্ছে। তাদের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।’ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ। দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন যুব, স্বেচ্ছাসেবক এবং ছাত্রদল নেতারা। এ সময় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী বলেন, ‘ঢাকার তারুণ্যের সমাবেশে নতুন জাগরণ ও গণজোয়ার সৃষ্টি হবে। তারুণ্যের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে। তরুণদের নিয়ে রাজপথে ফ্যাসিবাদী সরকারকে রুখে দেব।’ এসএম জিলানী বলেন, ‘সমাবেশের প্রস্তুতি অনেক আগেই শেষ হয়েছে। ঢাকা, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগের সমন্বয়ে সমাবেশ হবে। যারা অধিকারবঞ্চিত, চাকরি ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার- তাদের আমরা ঐক্যবদ্ধ করছি মাফিয়া সরকারের বিরুদ্ধে।’ এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম প্রমুখ। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, ‘ভোটাধিকারবঞ্চিত তরুণ তথা ন্যায়সঙ্গত অধিকার বঞ্চিত মানুষের জন্য দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে তারুণ্যের সমাবেশ ডেকেছি। এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণ সমাজকে জাগ্রত করতে পেরেছি। আশা করি ঢাকায় স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশ হবে।’ গত মাসে চট্টগ্রাম থেকে প্রথম তারণ্যের সমাবেশ শুরু হয়। এরপর বগুড়া, বরিশাল, সিলেট, খুলনায় তারুণ্যের সমাবেশ করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল।