নাটোরে যুবলীগ নেতা মিঠুন আলীকে কুপিয়ে হাতের কবজি কেটে নেওয়ার অভিযোগে সোমবার মধ্যরাতে নাটোর থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলু, তার সহোদর নাটোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুলকে যথাক্রমে ১, ২ ও ৩ নম্বর অভিযুক্ত করা হয়েছে। নাটোর পৌর যুবলীগের তিন নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আহত মিঠুন আলীর ছোট ভাই স্বপ্ন বাদশা বাদী হয়ে সোমবার রাত ১২টার পর এ মামলা করেন। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ ছাড়া আরও ৮-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মঙ্গলবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নাটোর থানার উপপরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মামলায় বলা হয়েছে, রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাদী ও তার আহত ভাই মিঠুন আলী শহরের ভবানীগঞ্জ মোড়ের দলীয় অফিস থেকে পাশের বলারীপাড়ার বাসায় ফেরার সময় অভিযুক্ত মাহতাব হোসেনের বলারীপাড়ার বাসার সামনে অভিযুক্তরা তাদের ঘিরে ধরে। এ সময় প্রধান অভিযুক্ত নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান নির্দেশ দিলে অভিযুক্তরা পিস্তুল, হাঁসুয়া, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, লোহার রড, মরিচের গুঁড়া ও বোতলে ভরা তরল কেমিক্যাল নিয়ে তাদের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় ১২নং অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম পিস্তুল দিয়ে গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ৪, ৭ ও ৮ নং আসামি যথাক্রমে মো. সোহাগ, রিপন ও সাব্বির ধারালো চাপাতি নিয়ে তার ভাই মিঠুন আলীর ওপরে আক্রমণ করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। মো. সোহাগ চাপাতি দিয়ে মাথায় আঘাত করার সময় মিঠুন আলী হাত দিয়ে ঠেকালে তার হাতের কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তাদের দুই ভাইকে বাঁচাতে এসে এ সময় হামলাকারীদের আক্রমণে তাদের বড়ভাই জাহিদুল ইসলাম, সাক্ষী আবদুল্লাহ , আল আমিন ও বকুল গুরুত্বরভাবে আহত হন। বর্তমানে মিঠুন আলী ঢাকার একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমীন নেলি বলেন, মামলা হয়েছে। এখন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, গত ১৬ মে জেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ও নাটোর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নান্নু শেখকে প্রকাশ্যে দিনের বেলা শহরের ভবানীগঞ্জ মোড়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছিল এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারী মিঠুন আলীসহ কয়েকজন। সেই ঘটনার জেরে নান্নু শেখের লোকজন হয়ত বা রোববার রাতে মিঠুন ও তার অনুসারীদের ওপরে হামলা করে। পুলিশ তখনকার অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনলে আজ হয়তো এমন ঘটনা ঘটতই না। আজ যারা হামলা করেছে এবং যারা হামলার শিকার হয়েছে উভয়ই সন্ত্রাসী গ্রুপ। রমজান বলেন, তিনিসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের নামে এবং গুরুতর আহত নান্নু শেখের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার মাধ্যমেই প্রমাণিত হয়েছে এটি একটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা। রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতেই তিনিসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘৃণাভরে তাদের এই অপচেষ্টা প্রত্যাখান করবে।