‘মশা নির্মূলে ব্যবহৃত কীটনাশকের কার্যকারিতায় গবেষণা জরুরি’

প্রকাশিতঃ জুলাই ২৫, ২০২৩ | ৮:২৮ অপরাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

এডিস মশার দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে বেড়ে ওঠা এবং ডেন-ভাইরাস আক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধির বড় কারণ মারাত্মক পরিবেশের দূষণ। বিশেষ করে ঢাকায় বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, মাটি দূষণ, শব্দ দূষণ, আলো দূষণের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ ২০টি দূষণপ্রবণ মেগা শহরের মধ্যে ঢাকা চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী অতি ঘনবসতিপূর্ণ এ শহরের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর চরম উদাসীনতা রয়েছে। একইভাবে নাগরিকদের অসতর্কতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতি রয়েছে। ফলে সৃষ্ট দূষণ দিন দিন জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পরিবেশ তৈরি করছে। সব ধরনের মশার প্রজনন ক্ষেত্র সম্প্রসারণের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এসব মশা সাধারণ মানুষকে কামড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, চিকুনগুনিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত করছে। যারা কোমরবিডিটি তথা দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন তারা বেশি ঝুঁকিতে পড়ছেন। দেশব্যাপী চলমান ডেঙ্গুতে মানুষের আক্রান্ত ও মৃত্যু রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এজন্য সবার আগে মশা নির্মূলে ব্যবহৃত কীটনাশকের কার্যকরিতার গবেষণা জরুরি বলে মনে করেন সরকারের ‘জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম)’ এর কীটতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার। ড. গোলাম ছারোয়ার বলেন, ডেঙ্গুসহ অন্যান্য মশাবাহী রোগ প্রতিরোধ করতে হলে সবার আগে মশা নিধনে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। গবেষণায় দেখা গেছে, বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদানের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গুর জীবাণু বাহকের (এডিস মশা) শরীরবৃত্তীয় কার্যক্রমের দ্রুত পরিবর্তন ঘটে। এর সঙ্গে পরিপূরকভাবে যুক্ত হয়েছে মশা নিধনের নামে অনিয়ন্ত্রিত কেমিক্যাল কীটনাশক প্রয়োগ। উপর্যুপরি রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারের কারণে ভাইরাস বহনকারী মশার শরীরবৃত্তীয় পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। তার সঙ্গে পরিবেশের বিরূপ প্রতিক্রিয়া যোগ হয়ে ভাইরাসটির আক্রমণের গতিপ্রকৃতি ও ধরনের বহুমাত্রিক পরিবর্তন এনেছে। যার ফলে রাসায়নিক কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার মশা ও ভাইরাস দুটিকেই বেপরোয়া করে তুলেছে। বাড়িয়ে দিয়েছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ও আশঙ্কাজনক মৃত্যুহার। এডিস মশা নির্মূলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসা এডাল্টিসাইড ম্যালাথিয়ন ও ডেল্টামেথ্রিন এবং লার্ভিসাইড টেমিফোস কতোটা কার্যকর রয়েছে তা পরীক্ষা করে দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুযায়ী প্রয়োগকৃত এসব কীটনাশক বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মাঠপর্যায়ে কতটা কার্যকর হচ্ছে তা পুন:নিরীক্ষণের জন্য বিবেচিত হতে পারে। কারণ সঠিক জায়গা ও সঠিক সময়ে সঠিকমাত্রায় প্রয়োজনীয় ইন্টারভেলে কীটনাশক প্রয়োগে ব্যর্থ হলে মশা অবশ্যই প্রতিরোধী হবে। সেই প্রতিরোধের মাত্রা নিরূপণে সুনির্দিষ্ট গবেষণা করতে হবে। এক্ষেত্রে মশাসহ কীটপতঙ্গ নিয়ে কাজ করেন এমন বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া জরুরি।