‘ছয় মাসের মধ্যে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ’

প্রকাশিতঃ অগাস্ট ৭, ২০২৩ | ৮:১৫ অপরাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, সবার সহযোগিতায় ছয় মাসের মধ্যে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ করা হবে। নিম্নআয়ের মানুষের ক্ষেত্রে খোলা তেল বাদ দিয়ে প্যাকেটজাত তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা মূল্য বৃদ্ধি পেলেও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বিবেচনায় খোলা সয়াবিন তেল পরিহার করা উচিত। এছাড়া খরচ কমিয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের ছোট বোতল, পাউচ প্যাক ও মিনি প্যাক প্রস্তুত করা যেতে পারে। সোমবার অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে খোলা সয়াবিন তেল বিপণন ও বিক্রি বন্ধ বিষয়ে সচেতনতামূলক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সফিকুজ্জামান আরও বলেন, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের সময়সীমা ছয় মাস বর্ধিতকরণের আবেদন করা হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মিলগুলো খোলা সয়াবিন তেল ছয় মাসের মধ্যে কিভাবে বিক্রি বন্ধ করবে তার কর্মপরিকল্পনা আগামী সাত দিনের মধ্যে অধিদপ্তরে পাঠাবে। সেই কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যক্রমের অগ্রগতি অধিদপ্তর পর্যায়ক্রমে মনিটরিং করবে। মহাপরিচালক বলেন, আমরা খোলা সয়াবিন তেল তদারকির আগে সংশ্লিষ্ট মিলগুলোতে অবগত করেছি। ১ আগস্ট থেকে খোলা সয়াবিন তেল বন্ধের বিষয়ে সারা দেশে মোটিভেশনাল তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করছি। খোলা সয়াবিন তেলের ক্ষতিকর দিক নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের মনিটরিং ও প্রচারণা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সফিকুজ্জামান বলেন, খুচরা পর্যায়ে দেখা যায় সুপার পাম তেলকে সয়াবিন তেল হিসেবে বিক্রয় করছে। এক্ষেত্রে কোনো কোম্পানিকে শনাক্ত করা যাছে না। কারণ ড্রামে কোনো তথ্য থাকে না। এছাড়া লিটারপ্রতি ১৫-২০ টাকা বেশি বিক্রি করার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে। সবার সমন্বয়ে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি খোলা সয়াবিন তেল বন্ধে কাজ করতে চাই। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আজকের সচেতনতানূলক সভার আয়োজন করা হয়েছে। এ সময় অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, ডিজিএফআইয়ের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি, বিএসটিআইয়ের প্রতিনিধি, এনএসআইয়ের প্রতিনিধি, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, সিটি গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, রূপচাঁদাসহ বিভিন্ন ভোজ্যতেল রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, কারওয়ানবাজার ব্যবসায়ী সমিতিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় জানানো হয়, ভোজ্যতেলে ভিটামিন এ সমৃদ্ধকরণ আইন-২০১৩ কার্যকর হওয়ার পর থেকে ভোজ্যতেলে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ করার বিষয় ছিল। আমরা খোলা তেলে ভিটামিন এ পাচ্ছি না। খোলা তেলে ভিটামিন এ মিশানো হলেও প্রক্রিয়াজাত করার কারণে ভোক্তা পর্যায়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ভিটামিন এ থাকছে না। এছাড়া ড্রামে যে প্রক্রিয়ায় তেল সংরক্ষণ করা হচ্ছে- তা স্বাস্থ্যসম্মত কিনা, ড্রামগুলো ফুড গ্রেড কিনা, খোলা ড্রামে পোকামাকড় থাকছে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। মূলত এ কারণে শিল্প মন্ত্রণালয় ২০২২ সালের ২ জুন পরিপত্র জারি করে ৩১ জুলাই ২০২২ থেকে খোলা সয়াবিন তেল এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে খোলা পাম তেল বাজারজাতকরণ বন্ধের পরিপত্র জারি করে। গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় কমিটির মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মিটিংয়ে মিলসমূহ অবগত করে তারা ভোজ্যতেল প্যাকেটজাতকরণের বিষয়ে প্রস্তুত রয়েছে। এখন যেহেতু ভোজ্যতেলের মূল্য কমে এসেছে তাই আমরা এ বিষয়ে তদারকি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।