সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির স্কিমে নিবন্ধনের সংখ্যা ১০ হাজার অতিক্রম করেছে। শুকবার রাত ৮টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে অর্থবিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র। এর আগে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উদ্বোধন করেন। এদিন এই স্কিমে প্রায় ৮ হাজার মানুষ নিবন্ধন করেন বলে জানা গেছে। শুক্রবার সরকারি অফিস বন্ধ থাকলেও নিবন্ধন কার্যক্রম চালু ছিল। প্রথম দিন নিবন্ধনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চাঁদাও পরিশোধ করেন ১৭০০ জন। তবে শুক্রবার কতজন চাঁদা পরিশোধ করেছেন তা জানা যায়নি। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা শুক্রবার জানান, বৃহস্পতিবার পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধনের পর বিকাল পর্যন্ত প্রায় ছয় হাজার মানুষ নিবন্ধন করেন। পরে রাত ১২টা পর্যন্ত সেটি বেড়ে ৮ হাজারে দাঁড়ায়। এদিন ১ হাজার ৭০০ জন পেনশনের চাঁদা পরিশোধ করেন। যেহেতু পেনশনের নিবন্ধন থেকে শুরু করে চাঁদা পরিশোধের পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই করা যাচ্ছে, তাই আবেদনকারীর সংখ্যা প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে। তিনি বলেন, প্রথম দিনের সাড়া উৎসাহব্যঞ্জক। দেশের চার শ্রেণির প্রায় ১০ কোটি মানুষকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আনার কথা বিবেচনায় নিয়েই এই কর্মসূচি চালু করে সরকার। শুরুতে পেনশন ব্যবস্থায় থাকছে চারটি আলাদা স্কিম। এগুলো হচ্ছে- প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা। এর মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রবাস; বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের জন্য প্রগতি; রিকশাচালক, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে ও তাঁতি ইত্যাদি পেশার নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সমতা স্কিম নেওয়া হয়েছে। অর্থবিভাগের সূত্র আরও জানায়, আরও যে দুটি স্কিম পরে চালু করা হবে তার মধ্যে একটি শ্রমিক শ্রেণির জন্য, অন্যটি শিক্ষার্থীদের জন্য। তবে একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে বলা হতে পারে যে, ২০৩৫ বা ২০৪১ সাল থেকে সরকারি কর্মচারী এবং স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্যও সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি উন্মুক্ত করা হবে। সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর বয়স ৬০ বছর হলেই আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন একজন চাঁদাদাতা। তবে চাঁদাদাতা মারা গেলে তার মনোনীত উত্তরাধিকারী পেনশন পাবেন। এ ক্ষেত্রে চাঁদাদাতার ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত হতে যত বছর বাকি থাকবে, সেই সময় পর্যন্ত নমিনি পেনশন উত্তোলন করতে পারবেন। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে ইউপেনশন ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। পেনশন কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভুল তথ্য দিয়ে আবেদন করলে সেই আবেদন বাতিল হবে এবং জমাকৃত অর্থ ফেরতযোগ্য হবে না। নিবন্ধনের পরবর্তী ধাপে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা পাসপোর্ট নম্বর, একটি সচল মোবাইল ফোন নম্বর, ব্যাংক হিসাব নম্বর, নমিনির এনআইডি ইত্যাদি তথ্য লাগবে। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানান, কেউ যদি অনলাইনে পেনশন কর্মসূচিতে নিবন্ধন করতে না পারেন, তাহলে তিনি সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যেতে পারেন। সেখানে ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আগ্রহী ব্যক্তিদের পেনশনের জন্য নিবন্ধিত হওয়ার পাশাপাশি চাঁদা পরিশোধের বিষয়ে সহায়তা করবেন।