নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছে মন্ত্রিসভা সচিবের নেতৃত্বে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি। রোববার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এ সম্পর্কে আদালত বলেন, অনেক বড় এই প্রতিবেদনে স্পর্শকাতর বিষয় রয়েছে। এটি কোনো কপি করা হবে না। পুরোটা পড়ে আদেশ দিতে হবে। পরে আগামী ১৫ অক্টোবর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। গণমাধ্যমকে হাইকোর্টে প্রতিবেদন উপস্থাপন সংক্রান্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ ও রিটকারী আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনের অনুলিপি চান। তখন হাইকোর্ট বলেন, এ প্রতিবেদনে স্পর্শকাতর বিষয় রয়েছে। আমরা এখনো খুলে দেখিনি। বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। সেজন্য সময় প্রয়োজন। এখন এ প্রতিবেদনের অনুলিপি দেওয়া যাবে না। পরে দেওয়া হবে। র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের (৪০) মৃত্যুর পুরো ঘটনা তদন্তে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে ৫ এপ্রিল নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। নওগাঁর জেলা জজ পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে অন্তর্ভুক্ত করে কমিটি গঠন করতে বলা হয়। র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিচারিক তদন্ত চেয়ে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ সেদিন রুলসহ এ আদেশ দেন। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ওই ঘটনায় অংশ নেওয়া র্যাব কর্মকর্তাদের তদন্তকালে র্যাবের প্রধান কার্যালয়ে বদলি করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। ২২ মার্চ নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে তাকে আটক করে র্যাব। ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। র্যাবের ভাষ্য, প্রতারণার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সুলতানা জেসমিনকে আটক করা হয়েছিল। আটকের পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তবে স্বজনদের অভিযোগ, আটক হওয়ার আগে সুলতানা জেসমিন সুস্থ ছিলেন। র্যাবের হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।