সরকারকে ঋণ দিয়ে সাত হাজার কোটি টাকা মুনাফা

প্রকাশিতঃ অগাস্ট ২৩, ২০২৩ | ৬:৪৭ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

বিদায়ি ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারকে ঋণ দিয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া ডলার বিক্রি করে ৬ হাজার কোটি টাকা এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিয়ে দুই হাজার কোটি টাকা মুনাফা হয়েছে। সব মিলে গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ২৫২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। নিট মুনাফা ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা। নিট মুনাফার পুরোটাই সরকারের কোষাগারে চলে গেছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুরো বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার সভাপতিত্ব করেন। এ সময় পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। সভা সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা করে। যা বিদায়ি অর্থবছরে ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা হয়েছে। অর্থাৎ এক বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের আয় বেড়েছে ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক আয় করে ৬ হাজার ২৯ কোটি টাকা। বিদায়ি অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক রেকর্ড পরিমাণ ডলার বিক্রি ও সরকারকে ঋণ দেয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অপরদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা রেকর্ড পরিমাণ ঋণ নেয়। এর মধ্যে পুরো অংশই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া। এ দুই খাত থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছর বেশি আয় করে। এদিকে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের নগদ লিমিটেডের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসাবে নগদ ফাইন্যান্স পিএলসিকে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহারের আবেদন করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। সেটা মঙ্গলবারের বোর্ড সভায় গৃহীত হয়েছে। এর আগে ১ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে নগদ ফাইন্যান্স পিএলসির চূড়ান্ত লাইসেন্স অনুমোদন করা হয়। তবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করার আগেই নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সমর্পণের আবেদন করে চিঠি পাঠায়। ১০ জুলাই প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ খানের স্বাক্ষরে ওই চিঠি পাঠানো হয়। সভা সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষার যে বাধ্যবাধকতা ছিল তা এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া সভায় বৈদেশিক মুদ্রা বাজার পর্যবেক্ষণ ও আমদানি মূল্যের সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে ব্লুমবার্গ টার্মিনাল স্থাপনে বিষয়টি এজেন্টাভুক্ত থাকলেও আলোচনা হয়নি। পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমদানির বিষয়ে আরও ক্লোজলি মনিটরিং করার জন্য ব্লুমবার্গের সঙ্গে চুক্তি স্থাপন দরকার। যাতে পণ্যের দর সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা যায়। পণ্যের দর সাশ্রয়ী করার ক্ষেত্রে এটা ভূমিকা রাখবে। অপরদিকে সভায় এজেন্ডা হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের অনুকূলে পুনঃঅর্থসংস্থান বাবদ ১ হাজার কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুরি, বাণিজ্যিক ব্যাংকের কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ এবং আদায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডকে অর্থায়নের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সোনালী ব্যাংকে রাখা আমানতের সুদহার হিসাবায়নের ক্ষেত্রে লন্ডন ইন্টার ব্যাংক অফার রেটের (লাইবর) পরিবর্তে বেঞ্চমার্ক সুদহার ও মার্জিন নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। তবে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।