বিশ্বনাথে ভার্চুয়াল বাহাসে চেয়ারম্যান-মেয়র

প্রকাশিতঃ অগাস্ট ২৬, ২০২৩ | ৮:৪৯ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

সিলেটে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী অধ্যুষিত যে কয়টি উপজেলা-পৌরসভা রয়েছে তারমধ্যে বিশ্বনাথ অন্যতম। এই উপজেলার চেয়ারম্যান নুনু মিয়া। পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান। দুজনই প্রবাসী। নুনু মিয়া আওয়ামী লীগের নেতা হলেও মুহিবুর বহিষ্কৃত। তবে তিনি নিজেকে এখনো শেখ হাসিনার অনুসারী ও বঙ্গবন্ধুর সৈনিক বলে দাবি করেন। সম্প্রতি নুনু মিয়া ও মুহিবুরের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে। সরাসরি সংঘাত-সংঘর্ষ না হলেও ভার্চুয়ালি একে অপরকে আঘাত ও গালিগালাজ করে বক্তব্য দিচ্ছেন। দেখে নেওয়ার হুমকিও দিচ্ছেন। এ নিয়ে বিশ্বনাথে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে মেয়র মুহিবুর চেয়ারম্যান নুনু মিয়াকে পশুচোর বলে গালি দেন। বলেন, নুনু মিয়া বাড়ি-ঘর, জায়গা-জমি বিক্রি করছেন। যে কোনো সব নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে পারেন। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। অন্যদিকে নুনু মিয়া এক ভিডিওতে বলেন, মুহিবুর অসুস্থ, মাতাল। মায়ের কসম দিয়ে বলছি, আমি শেষ দেখা দেখে ছাড়ব। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর অনুপস্থিতিতে স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতাসহ অনেকেই আওয়ামী লীগে যোগ দেন। বিএনপিতে রয়ে যাওয়া বাকি অংশের ইন্ধনে চলেন মুহিবুর। পৌর মেয়রও হয়েছেন নিখোঁজ ইলিয়াসের গুণকীর্তন করে, আবেগ ছড়িয়ে। তারা বলছেন, নুনু-মুহিবুরের এমন মুখোমুখি অবস্থানের কারণে পুরো উপজেলা ও পৌরসভায় দুই জনপ্রতিনিধির অনুসারীদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। জানা যায়, ইলিয়াস আলীর বাড়িও বিশ্বনাথে। তিনি মাঠে থাকাকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগে অনেকটা ঐক্য ছিল। ইলিয়াসকে পরাজিত করে প্রবাসী নেতা শফিকুর রহমান চৌধুরী ওই আসন আওয়ামী লীগের দখলে আনেন। এরপর মুহিবুর রহমান দুবার উপজেলা চেয়ারম্যান হন। এ সময় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-বিভক্তি বিস্তৃতি লাভ করে। এখনো তা বিদ্যমান। এরপর বিশ্বনাথ পৌরসভা গঠন হলে বিপুল ভোটে মুহিবুর প্রথম পৌর মেয়র নির্বাচিত হন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও ভোট পান নৌকার প্রার্থীর প্রায় তিনগুণ। সম্প্রতি উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়ার সঙ্গে তার বিরোধ চরমে উঠে। মুহিবের অনুসারীরা নুনু মিয়ার বিরুদ্ধে প্রকল্পের লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছেন। নুনু মিয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা আদালতে মামলা করেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়র মুহিবুরকে সতর্ক করে একটি ভিডিও পোস্ট করেন উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়া। এতে তিনি বলেন, ‘আমি আমার মায়ের কসম দিয়ে বলছি, মুহিবুর রহমান সাবধান, এত দিন আমি শুধু অবজারভ করেছি। ধৈর্য্য ধরেছি। তোমার দৌড় কোথায় তা আমি জানি। মুহিবুর গম চুরির মামলায় জেল খেটেছেন, এটা কেউ ভুলেনি। আর বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না।’ এর আগে একটি অনুষ্ঠানে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান চেয়ারম্যান নুনু মিয়াকে চোর আখ্যায়িত করে তাকে রুখে দেওয়ার বার্তা দেন। এ ছাড়া মুহিবুর ভুক্তভোগী ও মামলার বাদীকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের অনিয়মের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করেন। এতে তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা দেশে এসে নির্বাচন করেন। মানুষ সহজে গ্রহণ করেন। ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। প্রবাস থেকে যারা এসে জনপ্রতিনিধি হন, তাদের একটা গুণাবলী থাকে যে, প্রবাসীরা ঘুষ-দুর্নীতির ঊর্ধ্বে থাকেন। কিন্তু এর ব্যতিক্রম শুধু বিশ্বনাথের নুনু মিয়া। আমি তার অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে জনসাধারণকে অবহিত করেই যাচ্ছি। আর সেটা নির্ভয়ে করে যেতে চাই। কারণ আর যাতে বিশ্বনাথের জনগণ প্রতারিত না হন। সে একটা পশুচোর।’