হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টমসের গুদাম থেকে সাড়ে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এ ঘটনা চুরি নাকি আত্মসাৎ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডিএমপি কমিশনার। এদিকে এ ঘটনায় মামলার প্রতিবেদন ১৫ অক্টোবরের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, মামলাটি এখনো থানা পুলিশ তদন্ত করছে। এর তদন্তভার ডিবি বা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে দেওয়া হতে পারে। তিনি বলেন, এ ঘটনাকে চুরি বলব নাকি আত্মসাৎ বলব-এমন একটি বিষয় রয়েছে। যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেটি একটি সুরক্ষিত এলাকা। সেখানে বাইরের লোক গিয়ে চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে হয় না। তদন্তের পরই বিস্তারিত বলা যাবে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা ছায়া তদন্ত করছি। যেহেতু মামলাটি এখনো থানা পুলিশ তদন্ত করছে, তাই সেই অর্থে আমরা কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করিনি। তদন্তভার আমাদের কাছে এলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। বিমানবন্দর থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, সোমবার থেকে আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। তবে তাদের কাউকে এখনো গ্রেফতার দেখানো হয়নি। ডিএমপি উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, স্বর্ণ চুরির ঘটনায় কাস্টমসের দুই রাজস্ব কর্মকর্তাসহ তিনজনকে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ হচ্ছে। তিনি বলেন, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম শাহেদ এবং সহযোগী হিসাবে সিপাহি নিয়ামত হাওলাদারকেই এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। এই তিনজনকে ডিউটির সময় ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিমানবন্দর চত্বরে অবস্থান করার বিষয়টি প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মোর্শেদ আলম বলেন, যেখানে স্বর্ণ রাখা হয়েছিল সে গোডাউন (গুদাম) ছিল অবহেলিত অবস্থায়। অস্থায়ী গোডাউনে এ স্বর্ণ রাখা হয়েছিল। এ গুদামের পাশেই মূল্যবান পণ্য রাখার ব্যবস্থা থাকলেও তারা সেখানে রাখেননি। আর স্বর্ণ আটকের ৩ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তারা (কাস্টমস কর্তৃপক্ষ) জমা দেননি। রোববার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টম হাউজের গুদাম থেকে ৫৫.৫১ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনা প্রকাশ পায়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। মূলত এসব স্বর্ণ যাত্রীদের কাছ থেকে জব্দ করার পর কাস্টম হাউজের গুদামে রাখা হয়েছিল। চুরির ঘটনায় রোববার রাতে ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। বিমানবন্দর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মোজাফফর হোসেন মঙ্গলবার জানান, সোমবার মামলার এজাহার আদালতে আসে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত তা গ্রহণ করে বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক খোরশেদ আলমকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।