ভারতীয় সিনেমার সফল গায়ক কুমার শানু। তার শয়ে শয়ে কালজয়ী গান এখনও শ্রোতা-দর্শকদের মুখে মুখে। কিন্তু আজও তিনি জাতীয় সম্মাননা পাননি। এ নিয়ে আক্ষেপ রয়েছে কুমার শানুর। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে শানু বলেন, তেল দেওয়ার ক্ষমতা না থাকলে এ সম্মাননা পাওয়া যায় না। অথচ ‘কিং অব মেলোডি’ বাঙালি এই কণ্ঠশিল্পী একসময় দাপিয়ে কাজ করেছেন বলিউডে। নব্বইয়ের দশকের অন্যতম জনপ্রিয় প্লেব্যাক গায়ক তিনি। তার কালজয়ী, নন্দিত গানের তালিকা বেশ লম্বা। তিনি পেয়েছেন অনেক সম্মাননা। কিন্তু তার হাতে কখনো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার উঠেনি। অবশ্য এ নিয়ে আক্ষেপ নেই কুমার শানুর, এসব নিয়ে ভাবেনও না। আক্ষেপের প্রসঙ্গ উঠতেই ক্ষোভ ঝাড়লেন কুমার শানু। তিনি বলেন, হয়তো আমার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া উচিত ছিল। আমার পদ্মভূষণও পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমি এখন আর এসব নিয়ে ভাবি না। খারাপ তো লাগেই, কষ্ট হয়। তবে আমি এটাও বুঝি যে তৈলমর্দনের ক্ষমতা না থাকলে এসব সম্মান পাওয়া যায় না। কুমার শানু আরও বলেন, তেল না দিতে পারলে আপনি পুরস্কার পাবেন না। আপনার যদি তোষামোদ করার গুণ না থাকে, তাহলে আপনি এটা পাবেন না। আমি এখন বুঝি, এমনকি মানুষও বোঝে। কেউ তখনই পুরস্কার পায়, যখন তার নাগাল উচ্চমহল পর্যন্ত যায়। স্বাভাবিকভাবে এই পুরস্কার পাওয়া বেশ কঠিন।’ কিছুটা আক্ষেপের সুরেই কিংবদন্তি এই গায়ক বলেন, আমি কখনো এসবে মনোযোগ দিইনি। কে কী করছে, তাতে আমার যায় আসে না। সরকার যখন মনে করবে আমাকে পুরস্কার দেওয়া দরকার, তখন দেবে। তারা যদি না দেয়, আমার কী করার আছে?’ কুমার শানু হিন্দি ছাড়াও গান গেয়েছেন বহু ভাষায়। টানা পাঁচবার ফিল্মফেয়ারে শ্রেষ্ঠ গায়কের পুরস্কার পাওয়ার রেকর্ড তার দখলে। ২০০৯ সালে তাকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রীতে ভূষিত করে ভারত সরকার। তবে সেই পুরস্কারপ্রাপ্তির পর ১৪ বছর কেটে গেলেও আজও কুমার শানুর হাতে ওঠেনি জাতীয় পুরস্কার। আগস্টের শেষে ঘোষণা করা হয়েছে চলতি বছরের ভারতীয় জাতীয় পুরস্কারজয়ীদের তালিকা। ৬৯ তম জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে সেরা প্লেব্যাক গায়কের সম্মান পেয়েছেন কাল ভৈরব। ‘আরআরআর’ সিনেমার ‘নাটু নাটু’ গানটি গেয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, সেরা প্লেব্যাক গায়িকার সম্মান পেয়েছেন শ্রেয়া ঘোষাল।