রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে বাংলাদেশ তার পররাষ্ট্র নীতিতে অটুট থাকবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সংকট সমাধানের পক্ষে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে দুই দিনের সফরে সন্ধ্যায় ঢাকায় আসেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। ঢাকায় তার এটাই প্রথম সফর। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। পরে তারা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন দুই দেশের মন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে ড. মোমেনের কাছে নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন উপায়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ নিয়ে ঢাকার মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়। জবাবে মোমেন বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি আছে। ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’- আমরা ভারসাম্য কূটনীতি মেনে চলার চেষ্টা করি। আমরা আমাদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিই। আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ সব সমস্যার সমাধান করতে চায় জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে- সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, আমরা এ অঞ্চলে প্রক্সি ওয়ার চাই না। আমরা সব সমস্যার সমাধান শান্তিপূর্ণ সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে করতে চাই। এটাই আমাদের অবস্থান। এ সময় মস্কোর সঙ্গে ঢাকার গভীর সম্পর্কের কথা তুলে ধরে মোমেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়া আমাদের সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ গঠনে তারা আমাদের অনেক সাহায্য করেছে। আমাদের সঙ্গে তাদের গভীর সম্পর্ক। রাশিয়া আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করছে। প্রায় আধঘণ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচরা বিষয়ে মোমেন বলেন, আমরা উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়ানোর কথা বলেছি। এ দেশে অনেক স্কোপ রয়েছে। ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে, হাইটেক পার্ক রয়েছে- এগুলোর সুবিধা তারা নিতে পারেন। তারা বলেছেন, নিউক্লিয়ার ফুয়েল টেকসইভাবে অনেক দিন দেবেন। বৈঠকে রাশিয়া বাংলাদেশকে এলএনজি এবং ক্রুড অয়েল আনার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানান মোমেন। তিনি বলেন, তারা (রাশিয়া) বলেছেন- তাদের দেশ থেকে আমরা এলএনজি আনতে পারি। তারা আমাদের প্রস্তাব করেছেন, তাদের দেশ থেকে ক্রুড ওয়েল আনতে পারি। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে নৈশভোজে অংশ নেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।