প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে কয়েকবার সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। এর আগে কোনো সরকার কখনও এমন প্রতিশ্রুতি দেয়নি। এই প্রথমবার সরকারপ্রধান এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ জন্য আমি বলব, আস্থা রাখতে চাই।’ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রত্যাশা ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা ও পর্যালোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আশ্বস্তবোধ করছে বলে দাবি করে সিইসি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আশ্বস্ত বোধ করছি। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের তরফ থেকে আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার কথা বলা হয়েছে। এ প্রতিশ্রুতি সরকার দিয়েছে। এর আগে কিন্তু সরকার কখনো এমন প্রতিশ্রুতি দেয়নি। এবারই প্রথম সরকার এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, সেতুমন্ত্রী; উনারাও সরকার শব্দটা ব্যবহার করেছেন। প্রধানমন্ত্রীও স্পষ্টভাবে কয়েকবার বলেছেন; সরকার আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। আমি বলব, আস্থা রাখতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা একটা কঠিন অবস্থায় আছি। এটা বিলেতের (বিদেশ) নির্বাচন হচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন করতে যাচ্ছে না। আপনারা বলেছেন, সংকট আছে; আমরাও তা অনুধাবন করি। অনেকগুলো সংকট নিরসন করতে হবে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে। এ কথাটি বারবার বলেছি, আমাদের জন্য অনুকূল পরিবেশ রাজনীতিবিদরা যদি তৈরি করে না দেন, তাহলে নির্বাচন করাটা কষ্টসাধ্য হবে। আর পরিবেশ অনুকূল করে দিলে আমাদের জন্য কাজটা সহায়ক হবে।’ সিইসি বলেন, নির্বাচনটা ভালো হবে কিনা- সেটা নির্ভর করছে ‘পলিটিকাল উইল’ (রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা) এর ওপর। আন্তরিক পলিটিকাল উইল থাকতে হবে। এটা আমার থেকে আসবে না। পলিটিক্স থেকে আসতে হবে বা সরকার থেকে আসতে হবে।’ সরকার ও দলকে সবসময় তালগোল পাকিয়ে ফেলা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিভাজনটা বুঝতে হবে। সরকার ও দল ভিন্ন জিনিস। সরকারি দল বলতে কোনো শব্দ সংবিধানে নেই। এটা হয়ত মুখে বলে থাকি। যখনই একটা সরকার হয়ে যাবে, তখন সেসব দলের, সব জনগণের, পুরো দেশকে রিপ্রেজেন্ট করে।’ সমঝোতা প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি একটা সমঝোতার কথা, আপনারা চায়ের টেবিলে বসেন। কিন্তু পলিটিকাল কালচার এমন হয়েছে, কেউ কারও সঙ্গে বসতে চাচ্ছেন না। ইসি এ সমস্যার সমাধান করে না। দুঃখজনক হলো, সে ধরনের সিভিল সোসাইটিও দেখতে পাচ্ছি না।’ তিনি বলেন, ‘বারবার বলেছি, রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতা হোক। চায়ের টেবিলে বসেন। দেশীয় পদ্ধতিতেই সমাধান হতে হবে। কিন্তু নাগরিক সমাজকে সেভাবে সক্রিয় দেখছি না।’ বৈঠকে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সাবেক নির্বাচন কমিশনার, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, সাবেক সচিব, সাবেক রাষ্ট্রদূত, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা অংশ নেন।