সরকার সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশ-বিদেশে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। এ বিষয়ে তারা মন্ত্রণালয়কে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলেছে। বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে সংসদীয় কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, মো. আব্দুল মজিদ খান এবং মো. হাবিবে মিল্লাত উপস্থিত ছিলেন। সরকারের বিরুদ্ধে দেশের বাইরে যেসব মিথ্যা অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার যথাযথ জবাব দিতে পারছে না বলে মনে করে সংসদীয় কমিটি। এজন্য কমিটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে সমন্বয় করার সুপারিশ করেছে। জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারবিরোধী প্রচারণার উত্তর দেওয়ার জন্য কমিটি আগেই মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছিল। ওই সুপারিশের অগ্রগতির বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, যেসব প্রবাসী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে, বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলো সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেসব অপপ্রচারের প্রতিবাদ ও যৌক্তিক জবাব দিতে সদা তৎপর। অপপ্রচার মোকাবিলা করার জন্য এবং বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর সঙ্গে কার্যক্রম চলমান আছে। অপপ্রচার প্রতিরোধে তারা নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন, টুইটারে জবাব দিচ্ছে বলেও জানানো হয়। তবে সংসদীয় কমিটি বলেছে, যে পরিমাণ গুজব সরকারের বিরুদ্ধে রটানো হচ্ছে, অসত্য কথা বলা হচ্ছে— সেই পরিমাণ জবাব দিতে দেখা যাচ্ছে না। পরে সংসদীয় কমিটি বলেছে, দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়াও আরও কিছু মন্ত্রণালয় গুজবের জবাব দিয়ে থাকে। সেগুলো খুঁজে দেখে ওই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য সুপারিশ করে কমিটি। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে যেসব গুজব এবং মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে তার জবাব দিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়েছে। এদিকে সরকারের সাফল্য ও দেশের অগ্রযাত্রা বিদেশি সরকার, সংস্থা, গণমাধ্যম এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে তুলে ধরা হয় বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। একই সঙ্গে দেশের বাইরে অবস্থান করে রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা, অপপ্রচারকারী, উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদানকারী এবং তালিকাভুক্ত দুষ্কৃতকারীদের বিষয়ে সচেতনতার পাশাপাশি তাদের নিবৃত্ত করার জন্য মন্ত্রণালয় নানা ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া ফেসবুক পেজ ও টুইটারের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে আসা অতিথিদের সঙ্গে আলোচনা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে মিডিয়াসহ বিশ্ববাসীকে অবহিত করছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্প্রতি ব্রিকস সম্মেলন-২০২৩ এ অংশগ্রহণের ওপর রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণের ওপর সারসংক্ষেপ বৈঠকে আলোচনা করা হয়।