মান-অভিমান ভুলে ঐক্যবদ্ধ ছাত্রলীগ

প্রকাশিতঃ সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ | ৫:১৩ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

মান-অভিমান ভুলে আবারও ঐক্যের পথে ছাত্রলীগ। সম্প্রতি সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের মধ্যকার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট এবং বক্তব্য দিলে সম্পর্কের চিড় ধরে। তবে এসব কিছুর অবসান হয় গত বৃহস্পতিবার রাতে। রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের নেতৃত্বে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সঙ্গে আলোচনা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজীবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সজল কুণ্ড। বৈঠকে আট নেতাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন বলে একমত হন। বৈঠক শেষে তারা সেলফি তুলেছেন, যা গত শুক্রবার ভোরে তারাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। সাদ্দাম হোসেন সেলফি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘টুগেদার উই উইল’ অর্থাৎ আমরা একসঙ্গে থাকব। ঢাবি শাখার সভাপতি শয়ন ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘শুভ সকাল’ এবং সাধারণ সম্পাদক সৈকত লিখেছেন, ‘ইউনাইটেড উই স্ট্যান্ড, ডিভাইডেড উই ফল’। গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, গত শুক্রবার জাতীয় জাদুঘরে প্রধানমন্ত্রী একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে এলে সেখানে তাদের দেখা হয়। তবে শনিবার দেখা বা বসা হয়নি। আমরা সামনে নিয়মিত কার্যক্রমে একসঙ্গে থাকব। কয়েক মাস ধরে ছাত্রলীগের বিরোধ শীতল থাকলেও এই দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেয়েছে ছাত্রলীগের ছাত্র সমাবেশের পর। কমিটি ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিরোধ তৈরি হয়। কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শীর্ষ দুই নেতার অনুসারীদের কম পদায়ন, অধিভুক্ত সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অধীনে আনা নিয়ে বক্তব্য জোরালো করতে থাকে ঢাবি ছাত্রলীগ। পরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য দিতে না দেওয়ায় ঢাবি ছাত্রলীগের সঙ্গে বিরোধে যোগ হয় মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ছাত্রলীগের। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা জানান, কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তারা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের মতবিরোধের কথা জানান। তখন প্রধানমন্ত্রী সবাইকে একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেন। যদি দ্রুত সমাধান না করা হয়, তাহলে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়েও বলেন। পরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে এই বৈঠক করে এক থাকার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হন ছাত্রলীগের নেতারা। তবে ওপরের নির্দেশে নয়, বরং নিজেদের তাগিদেই নিজেদের মধ্যকার সমস্যার সমাধান নিজেরাই করেছেন বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ও ঢাবির নেতৃবৃন্দ। এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈকত বলেন, নিজেদের মধ্যে যেসব ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, সেগুলো আমরা মিটিয়ে নিয়েছি। ওপর থেকে সমস্যা সমাধানের কোনো নির্দেশনা এসেছিল কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওপর থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আমরা নিজেরাই সব মিটিয়ে নিয়েছি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, এত বড় সংগঠন পরিচালনা এবং নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক বোঝাপড়া নিশ্চিত করতে গেলে অনেক সময় নানা ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। এর মাধ্যমে যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, আমরা ভাই ভাই মিলে সব সমাধান করে জানান দিয়েছি, আমাদের ভ্রাতৃত্বের মধ্যে কোনো খেদ নেই।