বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা নাইকো দুর্নীতি মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) এক কর্মকর্তা ও কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। রোববার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান শুনানি শেষে এ অনুমতি দেন। এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাক্ষীদের আদালতে হাজির করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। আদালত শুনানির জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। রোববার মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলমকে জেরা করার দিন ধার্য ছিল। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন। এরপর বিদেশি তিনজনের সাক্ষ্য নেওয়ার আবেদনের উপর শুনানি হয়। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করে পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। এর আগে গত ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন একই আদালত। দুদক ২০০৭ সালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করে। দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেছিলেন। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। মামলার অন্য বাকিরা হলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। এর মধ্যে এ কে এম মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সরকারে থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেন। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।